30 March 2019

আজ ৩০শে মার্চ, লেখক ও চিত্রনাট্যকার শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়ের ১২০তম জন্মবার্ষিকীতে আমাদের শ্রদ্ধাঞ্জলি।

শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম করলেই তাঁর সৃষ্টি গোয়েন্দা চরিত্র ব্যোমকেশ বক্সীর কথা মনে পড়ে যায়। শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় 'পথের কাঁটা' গল্পে প্রথম ব্যোমকেশের আত্মপ্রকাশ ঘটান। তখন তাঁর বয়স ৩৩ বছর। এর পরের গল্প 'সীমান্তহীরা'। এই দুটি গল্প লেখার পর তিনি ব্যোমকেশকে নিয়ে একটি সিরিজ লেখার পরিকল্পনা করেন। ব্যোমকেশ বক্সী শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়ের সৃষ্ট সবচেয়ে জনপ্রিয় চরিত্র। ডিটেকটিভ ব্যোমকেশ নিজেকে 'সত্যান্বেষী' বলে পরিচয় দেয়৷ পাঠকরা  'সত্যান্বেষী' গল্পটাকেই ব্যোমকেশের প্রথম গল্প হিসাবে ধরে। এই ডিটেকটিভ ব্যোমকেশকে নিয়ে শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় মোট ৩২টি গল্প -উপন্যাস লেখেন। ব্যোমকেশ চরিত্রটি নিয়ে বাংলা এবং হিন্দী দুটি ভাষাতেই অনেক সিনেমা তৈরী হয়েছে।

শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় জন্মগ্রহণ করেন উত্তরপ্রদেশের জৌনপুর শহরে মামার বাড়িতে। তাঁর আদি নিবাস ছিল উত্তর কলকতার বরানগরে। ১৯২৬ সালে পটনা থেকে আইন পাশ করে তিনি বাবার জুনিয়র হিসাবে ওকালতি শুরু করেন। ১৯২৯ সালে ওকালতি ছেড়ে তিনি সাহিত্য চর্চাতে মন দেন।

শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়ের রচিত প্রথম সাহিত্য প্রকাশিত হয় তাঁর ২০ বছর বয়সে, যখন তিনি কলকাতায় বিদ্যাসাগর কলেজে  পড়াশুনো করছিলেন। সেটা ছিল বাইশটি কবিতার সংকলন 'যৌবন স্মৃতি'। পড়াশুনোর সাথেই তিনি সাহিত্য চর্চা করতে থাকেন। তাঁর রচনার মধ্যে আছে বিভিন্ন ঐতিহাসিক উপন্যাস। যেমন 'কালের মন্দিরা', 'গৌর মল্লার', 'তুমি সন্ধ্যার মেঘ', 'তুঙ্গভদ্রার তীরে', ইত্যাদি। সামাজিক উপন্যাস যেমন 'জাতিস্মর', 'বিষের ধোঁয়া' বা অতিপ্রাকৃত নিয়ে তার 'বরদা সিরিজ' ও অন্যান্য গল্প এখনো বেস্টসেলার। শরদিন্দু ছোটগল্প ও শিশুসাহিত্য রচনাতেও পারদর্শী ছিলেন।

শরদিন্দু ১৯৩৮ সালে বম্বের বম্বে টকিজ এ চিত্রনাট্যকাররুপে কাজ শুরু করেন। ১৯৫২ সালে সিনেমার কাজ ছেড়ে স্থায়ীভাবে পূনায় বসবাস করতে শুরু করেন। পরবর্তী ১৮ বছর তিনি সাহিত্য চর্চায় অতিবাহিত করেন।

তাঁর অনান্য উপন্যাস- গল্প থেকেও সিনেমা তৈরি হয়েছে, যেমন উত্তম কুমারকে নিয়ে সত্যজিত রায়ের চিড়িয়াখানা। তপন সিংহের 'ঝিন্দের বন্দী', তরুণ মজুমদারের 'দাদার কীর্তি' ইত্যাদি সিনেমা বাঙালি দর্শকের মন জয় করেছিল। সত্যজিত রায়ের ছেলে সন্দীপ রায় শরদিন্দুর 'মনচোরা' উপন্যাস নিয়েও সিনেমা করেন।

১৯৭০ সালের ২২শে সেপ্টেম্বর হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে তাঁর মৃত্যু হয়।

তিনি রবীন্দ্র পুরস্কার, শরৎস্মৃতি পুরস্কার, মতিলাল পুরস্কার সহ অন্যান্য পুরস্কার লাভ করেন।

প্রিয় পাঠক–পাঠিকা ভালো লাগলে লাইক, কমেন্ট ও শেয়ার করুন। যে কোনো বিষয়ে জানা- অজানা তথ্য আমাদের সাথে আপনিও শেয়ার করতে পারেন।১০০০ শব্দের মধ্যে গুছিয়ে লিখে ছবি সহ মেইল করুন  wonderlandcity.net@gmail.com ঠিকানায়। লেখা আপনার নামে প্রকাশ করা হবে।

No comments:

Post a Comment