12 February 2019

চার্লস ফ্রিয়ার অ্যান্ড্রুজ ১২ই ফেব্রুয়ারী ১৮৭১ সালে ইংল্যান্ডে জন্মগ্রহণ করেন। আজ চার্লস ফ্রিয়ার অ্যান্ড্রুজের ১৪৮ তম জন্মবার্ষিকী।

চার্লস ফ্রিয়ার এন্ড্রুজ যিনি দীনবন্ধু এন্ড্রুজ নামে বিখ্যাত, ভারতের মাটিতে পা দিয়েছিলেন ১৯০৪ সালে। ভারতে এসে দেখলেন ইংরেজ শাসিত নিস্পেশিত দরিদ্র ভারতবাসীকে। ১৩ই এপ্রিল, ১৯১৯ সালে অমৃতসরের জালিয়ানওয়ালাবাগে অহিংস এক সমাবেশের ওপর চলল গুলি। প্রাণ গেল হাজারেরও বেশি নর-নারীর। নারকীয় এই গণহত্যা ভারতে ব্রিটিশ শাসনের ইতিহাসে সবচেয়ে কলঙ্কজনক অধ্যায়। সেই সময় এন্ড্রুজ সাহেব ছিলেন শান্তিনিকেতনে। নিপীড়িত মানুষের পাশে দাঁড়াবার জন্য তিনি পাঞ্জাব যাবার মনস্থির করেন।
কিন্তু ইংরেজ সরকার মানব দরদী ইংরেজ সাহেব এন্ড্রুজকে পাঞ্জাবে যেতে দিল না। এন্ড্রুজ যখন অমৃতসর রেল স্টেশনে পৌঁছান তখন তাকে আটক করে দিল্লিতে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হয়। পরে পাঞ্জাব থেকে সামরিক শাসন তুলে নেবার পর তিনি সেখানে যান। ছুটে বাড়ালেন পাঞ্জাবের এক প্রান্ত থেকে আন্য প্রান্ত। শুনলেন নিপীড়িত মানুষের কথা। তিনি চেয়েছিলেন মানুষের সেবা করেই ইংরেজদের কৃতকর্মের প্রায়শ্চিত্ত করতে। তিনি সকল ভারতবাসীর কাছে ক্ষমা ভিক্ষা চেয়েছিলেন।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৯১২ সালের জুন মাসে ইংল্যান্ডে যান। সেখানে  শিল্পী রোটেনস্টাইনের গৃহেই রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে পরিচয় হয় ইংল্যান্ডের চার্লস ফ্রিয়ার এন্ড্রুজ পরবর্তীকালে যিনি রবীন্দ্রনাথ ও গান্ধীজির অন্যতম ভক্ত হয়ে ওঠেন। এন্ড্রুজের সঙ্গে রবীন্দ্রনাথের হৃদ্যতাপূর্ণ সম্পর্ক ছিল এবং তিনি শান্তিনিকেতনে অনেক সময় অতিবাহিত করেছিলেন।

ইংল্যান্ডের চার্লস ফ্রিয়ার অ্যান্ড্রুস একজন খ্রিস্টান ধর্মপ্রচারক, শিক্ষাবিদ ও সমাজ সংস্কারক। তিনি মহাত্মা গান্ধীর ঘনিষ্ঠ বন্ধু হয়ে ওঠেন এবং ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের সমর্থক ছিলেন। ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনে ও সেন্ট স্টিফেনস কলেজে তাঁর অবদানের জন্য তাঁকে দীনবন্ধু বা "দ্য ফ্রেন্ড অফ দ্য পুওর" নামে ডাকা হয়।

চার্লস ফ্রিয়ার অ্যান্ড্রুজ ১২ই ফেব্রুয়ারী ১৮৭১ সালে ইংল্যান্ডে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা ছিলেন বার্মিংহামের ক্যাথলিক অ্যাপোস্টোলিক চার্চের "এঞ্জেল" (বিশপ)।

১৯০৪ সালে সালে তিনি দিল্লীতে সেন্ট স্টিফেনস কলেজে দর্শন পড়ানোর সময় যেখানে তাঁর অনেক ভারতীয় সহকর্মী ও শিক্ষার্থীর সাথে পরিচিতি ঘটে। তিনি শীঘ্রই  ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল কংগ্রেসের অন্দোলনে  জড়িত পড়েন এবং ১৯১৩ সালে তিনি মাদ্রাজের তুলো শ্রমিকদের ধর্মঘটের সমাধান করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন  করেছিলেন।

কলকাতা সফরকালে ৫ই এপ্রিল ১৯৪০ সালে চার্লি অ্যান্ড্রুজ মারা যান এবং কলকাতার লোয়ার সার্কুলার রোড  'খ্রিস্টান বরিয়াল গ্রাউন্ডে' কবরস্ত করা হয়।

আজ চার্লস ফ্রিয়ার অ্যান্ড্রুজের ১৪৮ তম জন্মবার্ষিকী।
আমরা ভুলব না এই এন্ড্রুজ সাহেবের কথা, ভুলব না তার মানব প্রেমের কথা। হে ভারত পথিক এন্ড্রুজ! দীনবন্ধু এন্ড্রুজ! ভারতবন্ধু এন্ড্রুজ! সকল ভারতবাসীর শ্রদ্ধা ও অভিনন্দন গ্রহণ করো!

ভালো লাগলে লাইক, কমেন্ট ও শেয়ার করুন।  জানা- অজানা তথ্য আমাদের সাথে আপনিও শেয়ার করতে পারেন।

No comments:

Post a Comment