31 October 2021

সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলের ১৪৬তম জন্মবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি।















ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে একজন দক্ষ রাজনৈতিক নেতা রূপে সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল খুবই বিখ্যাত  ছিলেন। তিনি ১৮৭৫ সালে ৩১শে অক্টোবর গুজরাটে জন্মগ্রহণ  করেন। তিনি ব্রিটেন  থেকে ব্যারিস্টারি  পাশ করে আমেদাবাদে ব্যারিস্টারি পেশায় যুক্ত হন।  এই পেশায় তিনি সুনাম অর্জন করেন। কিন্তু মন পড়ে থাকে দেশসেবায়। সে সময় ভারতের সর্বত্র গান্ধীজীর সত্যাগ্রহ আন্দোলন  চলছিল। আইন ব্যবসা ত্যাগ করে তিনি গান্ধীজীর আহ্বানে কংগ্রেসে যোগদান করেন।

আমেদাবাদের মিল শ্রমিকদের ধর্মঘটে  মহাত্মা গান্ধী  ও  সর্দার প্যাটেল  ছিলেন সংগ্রামের অধিনায়ক। অহিংসা ও সংযমের প্রভাবে শ্রমিকদের জয় হয়। এই আন্দোলনে সর্দার প্যাটেলের অসাধারণ দক্ষতা দেখান।

১৯৩১ সালে ক রাচীতে ক ং গ্রেসের অধিবেশনে সর্দার প্যাটেল  সভাপতি হন। তিনি গান্ধীজীর ডান্ডি অভিযানের পূর্বে গ্রেপ্তার  হন। সর্দার প্যাটেলের প্রচেষ্টায় ভারতের দ্বিতীয় বারের নৌবিদ্রহ তুলে নেওয়া হয়েছিল।  ১৯৪৬ সালে অন্তর্বতী সরকার প্রতিষ্টিত  হলে সেখানে  তিনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী  ছিলেন। স্বাধীন  ভারতের ইনি উপ প্রধানমন্ত্রী ওস্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর গুরু দায়িত্ব পালন করেন। দৃঢ়চেতা ও অসাধারণ  ব্যক্তিত্বের অধিকারী প্যাটেলকে লৌহমানব বলা হত।

সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ২০১৪ সাল থেকে ৩১শে অক্টোবরকে ভারতের রাষ্ট্রীয় একতা দিবস বা জাতীয় ঐক্য দিবস হিসাবে পালন করা হয়।  সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল প্রাক-স্বাধীন দেশের 562টি রাজ্যকে ভারতের প্রজাতন্ত্র গড়ে তোলার জন্য একত্রিত করার কৃতিত্ব পান। ১৯৫০ সালের ১৫ ডিসেম্বর মুম্বাইতে সৰ্দার বল্লভভাই পটেল পরলোকগমন  করেন।



২০১৮ সালে সৰ্দার বল্লভভাই পটেলের স্মৃতির  উদ্দেশ্যে ভারত সরকার  ঐক্যের মূর্তি নামে তাঁর  একটি শ্রেষ্ঠ  ভাস্কর্য  ১৮২ মিটার লম্বা মূর্তি নির্মান করা হয়। এটি ভারতের গুজরাট  রাজ্যের সাদু বেট আইল্যান্ডে  নর্মদা নদীর পাশে অবস্থিত ভাস্কর্যটি ২০ হাজার বর্গ  মিটারেও বেশি এলাকা  জুড়ে  অবস্থিত  এবং একটি কৃত্রিম  হ্রদ দ্বারা পরিবেষ্টিত।














21 October 2021

২১ অক্টোবর,২০২১ সালে আজাদ হিন্দ সরকার গঠনের ৭৮তম বার্ষিকীতে প্রতিবেদন। 








এই দিনে  ১৯৪৩ সালে আজাদ হিন্দ সরকার নামে ভারতের প্রথম স্বাধীন অস্থায়ী সরকার ঘোষণা করা  হয়।  ক্যাপ্টেন-জেনারেল মোহন সিং ১৯৪২ সালে ব্রিটিশ ভারতীয় সেনাবাহিনীর ভারতীয় যুদ্ধবন্দীদের নিয়ে সিঙ্গাপুরে আজাদ হিন্দ ফৌজ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, কিন্তু পরে তা ভেঙে যায়। ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল আর্মি (আইএনএ) কে সুভাষচন্দ্র বসু ১৯৪৩ সালের  ২১ অক্টোবর নতুন রূপ দান করেন।

ব্রিটিশ শাসন থেকে সম্পূর্ণ ভারতীয় স্বাধীনতা নিশ্চিত করার জন্য দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় আজাদ হিন্দ ফৌজ শুরু হয়েছিল। জাপান, ক্রোয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, জার্মানি, ইতালি এবং বার্মাসহ কয়েকটি দেশ আজাদ হিন্দ সরকারকে স্বীকৃতি দিয়েছিল। ২১শেঅক্টোবর, ১৯৪৩ সালে, সুভাষচন্দ্র বসু অধিকৃত সিঙ্গাপুরে আজাদ হিন্দের অস্থায়ী সরকার গঠনের ঘোষণা করেছিলেন।  তিনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষভাগে নির্বাসনে থাকা অস্থায়ী সরকারের ব্যানারে ব্রিটিশ শাসন থেকে ভারতকে মুক্ত করার সংগ্রাম শুরু করেছিলেন।

সুভাষচন্দ্র বসুর জন্ম ২৩শে জানুয়ারি, ১৮৯৭ সালে কটকে (সেই সময় বাংলা প্রদেশের উড়িষ্যা বিভাগের অংশ)।  'তোমরা আমায়  রক্ত দাও আমি তোমাদের স্বাধীনতা  দেব'।  একথা বলেছিলেন বাংলার একজন তেজস্বী  বীরপুরুষ সুভাষচন্দ্র বসু। পিতার নাম জানকীনাথ বসু। ইনি কটকের বিখ্যাত  সরকারি উকিল ছিলেন।  মাতা প্রভাবতী দেবী। কটকের র‍্যাভেনশা কলেজিয়েট স্কুল থেকে প্রবেশিকা পরীক্ষায় পাশ করে সুভাষচন্দ্র তার স্কুল শিক্ষা শেষ করে প্রেসিডেন্সি কলেজে অল্প সময়ের জন্য পড়াশোনা করেন।এই কলেজে পড়ার সময় এক ইংরেজ অধ্যাপক বাঙ্গালী জাতির সম্পর্কে কটুক্তি করেন। সুভাষচন্দ্র তাকে মেরে এই অপমানের প্রতিশোধ  নেন। ফলে সুভাষচন্দ্রকে কলেজ থেকে বিতাড়িত করে দেওয়া হয়। পরে তিনি স্যার আশুতোষ মুখোপাধ্যায়ের সাহায্যে কলকাতার স্কটিশ চার্চ কলেজ থেকে দর্শন অধ্যয়ন করেন এবং তারপর উচ্চশিক্ষার জন্য ব্রিটেনে যান।

যেহেতু সুভাষচন্দ্র একজন মেধাবী ছাত্র ছিলেন, তিনি মর্যাদাপূর্ণ ভারতীয় সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় (ICS) যোগ্যতা অর্জন করেছিলেন।  কিন্তু, সুভাষচন্দ্র ব্রিটিশ সরকারের অধীনে কাজ করতে চান না বলে  তিনি ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন।

সুভাষচন্দ্র ব্রিটিশদের সাথে কাজ করতে আগ্রহী না হওয়ায় তিনি স্বাধীনতা আন্দোলনে যোগ দেন এবং কংগ্রেস দলের সদস্য হন।  মহাত্মা গান্ধী এবং জওহর লাল নেহেরুর মতো নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিত্বের সাথে কাজ করা সত্ত্বেও, সুভাষচন্দ্রের  প্রধান মতাদর্শগত পার্থক্য ছিল।

সুভাষচন্দ্র  ১৯৩৮ সালে কংগ্রেস পার্টির সভাপতি হন। পরে মহাত্মাগান্ধী এবং দলের হাইকমান্ডের সঙ্গে মতবিরোধের কারণে তিনি কংগ্রেস ত্যাগ করে 'ফরওয়ার্ড ব্লক' দল গঠন করেন। ব্রিটিশ সরকার  সুভাষচন্দ্রকে গৃহবন্দি করলে ১৯৪১ সালের ১৭ই জানুয়ারির গভীর রাতে কলকাতার বাড়ী থেকে অন্তর্ধান হন। ভারতের উপনিবেশিক শাসকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে চেয়েছিলেন কারণ তিনি গান্ধীর অহিংসার আন্দোলন থেকে ভিন্ন মতে বিশ্বসী ছিলেন। সুভাষচন্দ্র  গোপনে কলকাতা ত্যাগ করে জার্মানিতে গমন করেন। বার্লিনে তিনি জার্মানির সমর্থনে ভারতের অস্থায়ী স্বাধীন সরকার গঠন করেন এবং বার্লিন বেতার সম্প্রচারের মাধ্যমে তাঁর ধ্যানধারণা প্রচার করতে থাকেন। জার্মানি থেকে তিনি জাপানের সঙ্গেও যোগাযোগ স্থাপন করেন। এ সময়ই জার্মানির ভারতীয় সম্প্রদায় সুভাষচন্দ্রকে ‘নেতাজী’ উপাধি দেয়। এখানেই ‘জয় হিন্দ’ স্লোগানের জন্ম।

ক্যাপ্টেন-জেনারেল মোহন সিং ১৯৪২ সালে ব্রিটিশ ভারতীয় সেনাবাহিনীর ভারতীয় যুদ্ধবন্দীদের নিয়ে সিঙ্গাপুরে আজাদ হিন্দ ফৌজ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, কিন্তু পরে তা ভেঙে যায়।  নেতাজী সুভাষচন্দ্র দক্ষিণ -পূর্ব এশিয়ায় বসবাসরত ভারতীয়দের সহায়তায় পুনরায় আইএনএ গঠন করেন এবং গর্বের সাথে এর দায়িত্ব নেন।যদিও নেতাজীর আজাদ হিন্দ ফৌজ ভারতের স্বাধীনতা অর্জন করতে পারেনি, তাদের এ চেষ্টা ভারতীয়দের মধ্যে জাতীয়তাবোধের সৃষ্টি করে পরবর্তীকালে তা স্বাধীনতা আন্দোলনে এক বিরাট অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করেছে।

১৯৪৫ সালে ফরমোজার তাইহোকু  বিমান দুর্ঘটনায় তিনি মারা গেছেন বলে প্রচার করা হয়।







26 September 2021

২৬শে সেপ্টেম্বর ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের ২০১তম জন্মবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি


 ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর কলকাতা  সংস্কৃত কলেজে একজন মেধাবী ছাত্র ছিলেন, যেখানে তিনি বিদ্যাসাগর ("শিক্ষার মহাসাগর") উপাধি পান এবং ১৮৫০ সালে সালে তিনি কলকাতার ফোর্ট উইলিয়াম কলেজের প্রধান পণ্ডিত (পণ্ডিত-শিক্ষক) নিযুক্ত হন।  এক বছর পরে তিনি সংস্কৃত কলেজের অধ্যক্ষ হন, যেখানে তিনি ইংরেজি অধ্যয়নের প্রচার করেন এবং নিম্নবর্ণের ছাত্রদের ভর্তি করেন।

বিদ্যাসাগর ইংরেজি সাহিত্যে বেশ পাণ্ডিত্য ছিল এবং পাশ্চাত্য ধারনা দ্বারা প্রভাবিত ছিলেন।  তিনি যদিও একজন গোঁড়া উচ্চবর্ণের ব্রাহ্মণ ছিলেন, তিনি সমাজ সংস্কার আন্দোলনে অগ্রণী অংশ নিয়েছিলেন, বিশেষত বিধবাদের পুনর্বিবাহকে বৈধ করার একটি সফল করা যাদের অনেকেরই শৈশবে প্রথম বিয়ে হয়েছিল।  তিনি বাল্যবিবাহ এবং বহুবিবাহের বিরোধিতা করেছিলেন এবং মেয়েদের শিক্ষার উন্নয়নে অনেক কিছু করেছিলেন, কিন্তু তার সংস্কারমূলক উদ্যোগের জন্য গোঁড়া তিনি অনেক হিন্দুদের বিরোধিতার সম্মুখীন হতে হয়েছিল।

বিদ্যাসাগর ছিলেন একজন প্রফুল্ল এবং বলিষ্ঠ লেখক।  তাঁর রচনার মধ্যে রয়েছে বেতাল পঞ্চবিংশতী  “  শকুন্তলা"  যা সংস্কৃত কবি এবং নাট্যকার কালিদাসের একটি বিখ্যাত নাটক অবলম্বনে নির্মিত হয়েছিল;  এবং সিতার বনবাস 

20 September 2021

২০শে সেপ্টেম্বর, অ্যানি বেসান্তের ৮৮তম মৃত্যুবার্ষিকীয়ে শ্রদ্ধাঞ্জলি।


একজন বিদেশিনী হয়েও অ্যানির ভারতীয় সমাজ ও সংস্কৃতি সম্প্রর্কে শ্রদ্ধাশীল হয়ে ওঠার ঘটনা ভগিনী নিবেদিতার সঙ্গে তুললীয়।এনারা দুজনই হিন্দু ধর্ম গ্রহন করেছিলেন।

অ্যানি যিনি ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনকে সমর্থন করেছিলেন। অ্যানি বেসান্ত প্রথম ১৮৯৩ সালে ভারতে আসেন, এবং পরে এখানে স্থায়ী হন এবং ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদী শাসন থেকে স্বাধীনতার জন্য দেশের সংগ্রামে জড়িত হন।

অ্যানি বেসান্ত ১৯১৬ সালে অল ইন্ডিয়া হোম রুল লীগ চালু করেছিলেন।অ্যানি বেসান্ট ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের১৯১৭ সালের কলকাতা অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন।

"ব্রিটিশরা ভাল, যদিও প্রায়শই নিষ্ঠুর, উপনিবেশবাদী যেখানে তারা সম্পূর্ণ অসভ্য উপজাতিদের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করে যাদের অতীত ভুলে যাওয়া যায় না।  কিন্তু তারা তাদের ভারী বুট দিয়ে পদদলিত করে ভারতের মতো একটি প্রাচীন, অত্যন্ত সভ্য এবং সংস্কৃতিশীল জাতির সংবেদনশীল, সূক্ষ্ম সংবেদনশীলতার উপর"।  ব্রিটিশ সমাজ সংস্কারক, সমাজসেবী এবং ভারতীয় জাতীয়তাবাদের সমর্থক অ্যানি বেসান্ট একসময় বলেছিলেন, মিডিয়া ব্যাপকভাবে প্রচার করে।  আজ তার ৮৮তম মৃত্যুবার্ষিকী।

অ্যানি উড ১৮৪৭সালের ১ অক্টোবর লন্ডনে জন্মগ্রহণ করেন। ২০ বছর বয়সে অ্যানি, যিনি আইরিশ বংশোদ্ভূত মহিলা ছিলেন, ফ্রাঙ্ক বেসান্ট নামে একজন পাদ্রীকে বিয়ে করেন এবং এই দম্পতি দুটি সন্তানের আশীর্বাদ লাভ করেন। যাইহোক, অ্যানির অপ্রচলিত ধর্মীয় মতামতের কারণে, এই দম্পতি ১৮৭৩ সালে আলাদা হয়ে যান। ১৮৭৪ থেকে ১৮৯৩ এর মধ্যে, অ্যানি মহিলাদের ভোটাধিকার, পরিবার পরিকল্পনা, ট্রেড ইউনিয়ন এবং আইরিশ হোম রুলের জন্য কাজ করেছিলেন।

অ্যানি ১৯৮৩ সালে প্রথমবার ভারত সফর করেন। পরে তিনি এখানে বসতি স্থাপন করেন এবং ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদী শাসন থেকে স্বাধীনতার জন্য দেশের সংগ্রামে জড়িত হন।  বাল গঙ্গাধর তিলকের সঙ্গে তিনি ১৯১৬সালে অল ইন্ডিয়া হোম রুল লীগ চালু করেন। তিনি ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের অন্যতম বিশিষ্ট সদস্যও ছিলেন।  তিনি কংগ্রেসের ১৯১৭ সালের কলকাতা অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন। ১৯১৭  সালের জুন মাসে, ব্রিটিশ রাজ্য তাকে গ্রেফতার করার পরে কংগ্রেস এবং মুসলিম লীগ তাকে মুক্তি না দিলে প্রতিবাদ করার হুমকি দেয়।জাতীয় কংগ্রেস অনেকদিন ভারত শাসন করেছে কিন্তু তাদের সংগঠনের একজন সভাপতির স্মৃতি রক্ষায় তেমন কিছু করেনি।

অ্যানির এক ধরণের সর্বজনীন সত্যের ক্ষুধা সামাজিক ও রাজনৈতিক সংস্কারে সন্তুষ্ট হয়নি বলে মনে হয়।  পরে তিনি ১৮৭৫ সালে প্রতিষ্ঠিত একটি ধর্মীয় আন্দোলন থিওসফিতে আগ্রহ দেখান। পুনর্জন্ম এবং কর্মের হিন্দু ধারণাগুলি থিওসফিকাল আন্দোলনের ভিত্তি ছিল।  অ্যানি, একজন সদস্য এবং পরে থিওসফিক্যাল সোসাইটির সভাপতি হিসাবে, ভারত এবং বিশ্বের অন্যান্য অংশে থিওসফিক্যাল বিশ্বাস ছড়িয়ে দেন। কাশীতে তিনি থিওসফিক্যাল সোসাইটি প্রতিষ্টা করেন।এবং সেখানে বিখ্যাত সেন্ট্রাল হিন্দু কলেজ স্থাপন করেন।

অ্যানি নিজের রচিত গ্রন্থাবলির আয় জন হিতকর কাজে ব্যয় করতেন।নিজের রাজনৈতিক মত প্রকাশের উদ্দেশ্যে তিনি "কমন উইন" নামে পত্রিকা প্রকাশ করেন। অ্যানি তার অনন্য ব্যক্তিত্ব এবং সাংগঠনিক পদ্ধতির মাধ্যমে ১ম বিশ্বযুদ্ধের বছরগুলিতে অ্যানি ভারতীয় জাতীয়তাবাদী রাজনীতিতে পরিবর্তন এনেছিলেন।অ্যানি পৃথিবী থেকে ১৯৩৩ সালে চিরতরে বিদায়  নেন।

15 September 2021

১৫ই সেপ্টেম্বর শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ১৪৫ তম জন্মবার্ষিকীতে আমাদের শ্রদ্ধাঞ্জলি।

 

বঙ্কিমচন্দ্রের উপন্যাসে দাঁত ফোটানো সাধারণ মানুষের পক্ষে যখন কঠিন হয়ে উঠেছিল সেই সময় শরৎচন্দ্রের  আবির্ভাব। তাঁর সহজ সরল অনাড়ম্বর ভাষা সাধারণ মানুষকে আগ্রহী  করে তোলে। শরৎচন্দ্রের কলম অবহেলিত নারী চরিত্র নিয়ে বেশী চলেছে। এক সময় কেন এখনও শরৎচন্দ্র আদরের মানুষ। মা বোনেরা শরৎচন্দ্রেকে তাদের আপনার মানুষ বলেই ভাবেন। এখানের শরৎচন্দ্রের সাফল্য।

১৫ই সেপ্টেম্বর, ১৮৭৬ সালে হুগলি জেলার দেবানন্দপুরে শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর কিশোর ও প্রথম জীবন কাটে ভাগলপুরে মাতুলালয়ে। প্রাথমিক পর্যায়ে তিনি দেবানন্দপুরের হুগলি ব্রাঞ্চ স্কুল ও ভাগলপুরের দুর্গাচরণ স্কুলে অধ্যয়ন করেন। তার পর জুবিলি কলেজিয়েট স্কুল থেকে এন্ট্রান্স পাশ করার পর ওই একই কলেজে এফএ শ্রেণিতে ভর্তি হন। কিন্তু দারিদ্রের কারণে তাঁর শিক্ষা জীবনের সমাপ্তি ঘটে।

অধ্যয়নে বিরতি ঘটার পর শরৎচন্দ্র বনেলি স্টেটে সেটেলমেন্ট অফিসারের সহকারী হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। এর পর তিনি কলকাতা হাইকোর্টের অনুবাদক এবং বার্মা রেলওয়ের হিসাব দফতরের কেরানি পদে চাকরি করেন। এক সময় তিনি সন্ন্যাসী দলে যোগ দেন এবং গান ও নাটকে অভিনয় করেন। শরৎচন্দ্র কংগ্রেসের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তিনি কয়েক বছর বাদে কংগ্রেসের অসহযোগ আন্দোলনে যোগ দেন এবং হাওড়া জেলা জেলা কংগ্রেসের সভাপতি নির্বাচিত হন।

তাঁর প্রথম উপন্যাস 'বড়দিদি' ভারতী পত্রিকায় প্রকাশিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সাহিত্যজগতে তাঁর খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে। এর পর তিনি একে একে 'বিন্দুর ছেলে ও অন্যান্য', 'পরিণীতা', 'বৈকুণ্ঠের উইল', 'পল্লীসমাজ', 'দেবদাস', 'চরিত্রহীন', 'নিষ্কৃতি', 'শ্রীকান্ত', 'দত্তা', 'গৃহদাহ', ‘দেনাপাওনা’, ‘পথের দাবী’, ‘শেষ প্রশ্ন’ ইত্যাদি গল্প উপন্যাস এবং ‘নারীর মূল্য’, ‘স্বদেশ ও সাহিত্য’ প্রবন্ধ গ্রন্থ রচনা করেন। এগুলির মধ্যে 'শ্রীকান্ত', 'চরিত্রহীন' 'গৃহদাহ', ‘দেনাপাওনা’, ‘পথের দাবী’ খুবই জনপ্রিয়তা লাভ করে। তাঁর 'পথের দাবী' উপন্যাসটি বিপ্লববাদীদের প্রতি সমর্থনের অভিযোগে ব্রিটিশ সরকার বাজেয়াপ্ত করে।

শরৎচন্দ্র বাংলা সাহিত্যের এক জন অমর কাব্যশিল্পী। তাঁর উপন্যাসের মূল বিষয় পল্লীর জীবন ও সমাজ। ব্যক্তিমানুষের মন পল্লীর সংস্কারাচ্ছন্ন মানসিকতার আঘাতে কতটা রক্তাক্ত হতে পারে তারই রূপচিত্র এঁকেছেন তিনি তাঁর রচনায়। তবে তাঁর উপন্যাসে ব্যক্তিবর্গের ইচ্ছাভিসার ও মুক্তি সর্বদাই সমাজ কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত হয় বলে তাঁকে রক্ষণশীলও বলা হয়ে থাকে। তবে নারীর প্রতি সামাজিক নির্যাতন ও তার সংস্কারবন্দি জীবনের রূপায়ণে তিনি বিপ্লবী লেখক বিশেষত গ্রামের অবহেলিত ও বঞ্চিত নারীর প্রতি তাঁর গভীর মমত্ববোধ ও শ্রদ্ধা তুলনাহীন। সামাজিক বৈষম্য, কুসংস্কার ও শাস্ত্রীয় অনাচারের বিরুদ্ধে তিনি ছিলেন উচ্চকণ্ঠ। কাহিনী নির্মাণে অসামান্য কুশলতা এবং অতি প্রাঞ্জল ও সাবলীল ভাষা তাঁর কাব্যসাহিত্যের জনপ্রিয়তা ও খ্যাতির প্রধান কারণ। বাংলাসহ ভারতীয় বিভিন্ন ভাষায় তাঁর অনেক উপন্যাসের চিত্রনাট্য নির্মিত হয়েছে এবং সেগুলি অসাধারণ সাফল্য অর্জন করেছে যা 'দেবদাস', 'শ্রীকান্ত', 'রামের সুমতি', ‘দেনাপাওনা’, ‘বিরাজবৌ’ ইত্যাদি।

সাহিত্যকর্মে অসাধারণ অবদানের জন্য শরৎচন্দ্র কুন্তলীন পুরস্কার, জগত্তারিণী স্বর্ণপদক, বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদের সদস্যপদ এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিলিট উপাধি লাভ করেন।১৯৩৮ সালের ১৫ই জানুয়ারি  তাঁর মৃত্যু হয়। কবিগুরু  রবীন্দ্রনাথও গল্প সাহিত্যে শরৎচন্দ্রের শ্রেষ্ঠত্বকে স্বীকার করেছেন।

13 September 2021

১৩ই সেপ্টেম্বর  যতীন্দ্র নাথ দাস-বিপ্লবী যিনি কারাগারে রাজনৈতিক বন্দীদের সঙ্গে খারাপ আচরণের প্রতিবাদে আমরণ  অনশন  করে প্রাণ বিসর্জন দিয়েছিলেন।


 ৯৮ বছর আগে, রাজনৈতিক বন্দীদের অন্যায়ের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য ৬৩ দিনব্যাপী অনশন শেষে ১৩ই সেপ্টেম্বর, ১৯২৯ সালে  বিপ্লবী যতীন্দ্র নাথ দাস শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।  সেই সময় মাত্র ২৫ বছর বয়সী, দাস লাহোড় কেন্দ্রীয় কারাগারে শহীদ ভগত সিং এবং অন্যান্য বন্দী বিপ্লবীদের সাথে এই অনশন করেছিলেন।

তাকে অনেক কষ্ট সহ্য করতে হয়েছিল কারণ তাকে নির্মমভাবে মারধর করা হয়েছিল এবং জোর করে খাওয়ানোর প্রচেষ্টা তার ফুসফুসকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছিল। এমনকি প্যারালাইসিস তার শরীরের কিছু অংশে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করলে এবং তার যন্ত্রণা বেড়ে গেলেও তিনি অনশন চালিয়ে যাওয়ার উপর জোর দেন।  প্রকৃতপক্ষে, তার অবস্থা বিবেচনায় নিয়ে, একটি জেল কমিটি তার মুক্তির সুপারিশ করেছিল, কিন্তু সরকার এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছিল কারণ এটি মানুষের মধ্যে তার ব্যাপক জনপ্রিয়তার আশঙ্কা ছিল।

বিপ্লবী যতীন্দ্র নাথ দাসের মৃত্যুতে গণেশ শঙ্কর বিদ্যার্থী এবং জওহরলাল নেহেরুর নেতৃত্বে কানপুরে এবং কমলা নেহরুর নেতৃত্বে এলাহাবাদে কিছু বড় সমাবেশ হয়েছিল।  কলকাতায়, সুভাষ চন্দ্র বসু যখন কফিন গ্রহণের জন্য হাওড়া রেল স্টেশনে এগিয়ে আসেন, তখন বিশাল মিছিলের শেষ পর্যন্ত দৃশ্যমান ছিল না।  কিছু অনুমান অনুসারে, শহরে সাত লাখেরও বেশি মানুষ শ্মশান মিছিলে ছিলেন।

রাজনৈতিক বন্দীদের অধিকারের জন্য দাসের অনশন এবং মৃত্যু মানুষের উপর গভীর প্রভাব ফেলে।  

যতীন্দ্র নাথ দাস একজন যুবক হিসেবে ছিলেন অত্যন্ত প্রতিশ্রুতিশীল বিপ্লবী।  তিনি প্রথমে অনুশীলন সমিতিতে যোগদান করেন, তারপর হিন্দুস্তান রিপাবলিকান সোশ্যালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনে ভগৎ সিং এবং তার সহকর্মীদের সাথে যোগ দেন এবং ১৭ বছর বয়সেও তিনি মহাত্মা গান্ধীর নেতৃত্বাধীন অসহযোগ আন্দোলনের একজন উৎসাহী অংশগ্রহণকারী ছিলেন।

এই সবের মাঝখানে, তিনি তার পড়াশোনায় ভাল ছিলেন কিন্তু পুলিশ তাকে ময়মনসিংহ কারাগারে পাঠালে পড়াশুনায় ছেদ পরে। সেখানে, তিনি অবিলম্বে রাজনৈতিক বন্দীদের অবস্থার উন্নতির জন্য একটি অনশন শুরু করেন।  তরুণ বিপ্লবীর এমন প্রভাব ছিল যে জেল সুপার দুঃখ প্রকাশ করে এবং কিছু সংশোধন করতে সম্মত হন।

সুতরাং এই যুবক, যিনি মাত্র ২৫ বছর বেঁচে ছিলেন, রাজনৈতিক বন্দীদের অধিকারের প্রতি ব্যাপকভাবে জনগণের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে দুইবার সফল হন এবং তাও এমনভাবে যা লক্ষ লক্ষ মানুষকে এই সমস্যাটির প্রতি সাড়া দেয়।

সর্বোপরি, পৃথিবীতে খুব কম লোকই আছেন যারা এত অল্প বয়সে রাজনৈতিক বন্দীদের জন্য এত কাজ করতে পেরেছেন।  

08 September 2021

আপনার এসবিআই, এইচডিএফসি ও অন্যান্য ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে নিষ্ক্রিয় হতে পারে।


আপনার এসবিআই, এইচডিএফসি ও অন্যান্য ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে নিষ্ক্রিয় হতে পারে। জেনে নিন কেন আপনার অ্যাকাউন্ট নিষ্ক্রিয় হতে পারে।

এসবিআই তার গ্রাহকদের তাদের স্থায়ী অ্যাকাউন্ট নম্বর (প্যান) কে তাদের আধার কার্ডের সাথে লিঙ্ক করার কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে কারণ এটি করতে ব্যর্থ হলে ব্যাংকিং সুবিধা স্থগিত হয়ে যাবে।  

ব্যাংকগুলি তাদের গ্রাহকদের তাদের প্যানকে আধারের সঙ্গে লিঙ্ক করার পরামর্শ দিচ্ছে যাতে কোনও অসুবিধা না হয় এবং নির্বিঘ্নে ব্যাংকিং পরিষেবা উপভোগ করা  যায়।  যদি লিঙ্ক করা না থাকে, তাহলে PAN  নিষ্ক্রিয় হবে এবং নির্দিষ্ট লেনদেন পরিচালনার জন্য উদ্ধৃত করা যাবে না,

প্যান-আধার লিঙ্ক করার শেষ তারিখ ৩০শে সেপ্টেম্বর  ২০২১ 


এবং যে কোনও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট যেখানে প্যান-আধার  লিঙ্ক করা নেই সেটা নিষ্ক্রিয় ঘোষণা করা হবে। 

এখানে জেনে নিন কিভাবে আপনার অ্যাকাউন্টে প্যান-আধার লিঙ্ক করবেন।

এখানে একটি সহজ ধাপে ধাপে নির্দেশিকা রয়েছে:

১)আয়কর ই-ফাইলিং পোর্টাল 2.0 খুলুন।

২)'লিঙ্ক আধার' বিকল্পটি খুঁজে পেতে হোমপেজে নিচে স্ক্রোল করুন, এটিতে ক্লিক করুন।

৩)প্যান নম্বর, আধার নম্বর, আধার অনুযায়ী নাম এবং মোবাইল নম্বর অনুযায়ী প্রয়োজনীয় বিবরণ পূরণ করুন । 

৪)"আমি আমার আধার বিশদ যাচাই করতে রাজি" লেখা বাক্সে টিক দিন

৫)নিবন্ধিত মোবাইল নম্বরে প্রাপ্ত ছয় সংখ্যার ওটিপি লিখুন। 

৬)'ভ্যালিডেট' টিপুন

৭)একটি পপ-আপ বার্তা স্ক্রিনে দেখাবে যে, আধারের অনুরোধের সঙ্গে আপনার লিঙ্ক প্যান জমা দেওয়া হয়েছে। 

এখানে জেনে রাখা দরকার প্যান-আধার লিঙ্ক ক রার জন্য আপনার আধার কার্ড এবং প্যানের উপর আপনার নাম, জন্ম তারিখ এবং লিঙ্গ যাচাইয়ের উপর নির্ভর করবে।  উভয় আইডি প্রমাণের বিবরণ অভিন্ন হতে হবে।