26 November 2018

জগদীশ চন্দ্র বসু কেন বিনা বেতনে প্রেসিডেন্সি কলেজে ছাত্র পড়িয়ে ছিলেন-

ছোটবেলায় গাছপালা দেখলেই পাতা ছেঁড়া,ডালপালা ভাঙ্গা প্রায় আমার অভ্যাসে পরিণত হয়েছিল। কিন্তু হঠাৎ আর পারলাম না,কারণ স্কুলের শিক্ষিক একদিন বললেন যে,আমাদের যেমন হাত কাটা গেলে আমরা ব্যাথা পাই তেমনি গাছেরাও একই অনুভূতিতে সাড়া দেয়। কথাগুলো শোনার পর থেকে নিজের এই বদঅভ্যাস থেকে সরে তো আসলামই,অন্যদেরও দেখলে বকা দিতাম। স্যার জগদীশ চন্দ্র বসু, হ্যাঁ, তিনিই বিশ্ববাসীকে প্রথমবারের মত জানিয়েছিলেন উদ্ভিদের মধ্যে আছে প্রানশক্তি। এটি প্রমাণের জন্যে তিনি ‘ক্রেস্কোগ্রাফ’ নামক একটি যন্ত্র আবিষ্কার করেন,যা উদ্ভিদদেহের সামান্য সাড়াকে লক্ষগুণ বৃদ্ধি করণ প্রদর্শণ করে। ব্রিটিশশাসিত ভারতীয় উপমহাদেশে বিভিন্ন আশ্চর্যজনক যন্ত্র আবিষ্কার করে বিশ্বে হইচই ফেলে দেন এই বাঙালি বিজ্ঞানী। তিনি ১৮৫৮ সালে ৩০ নভেম্বর ময়মনসিংহ শহরে জন্ম নেন। ১১ বছর বয়সে ১৮৬৯ সালে জগদীশ চন্দ্র বসু কলকাতার সেন্ট জেভিয়ার্স স্কুলে ভর্তি হন।১৮৮০ সালে ডাক্তারি পড়ার জন্য জগদীশ চন্দ্র বসুকে বিদেশে পাঠান তার বাবা।
১৮৮৫ সালে তিনি লেখাপড়া শেষে ভারতে ফিরে আসেন। সেই সময়ে লর্ড রিপনের অনুরোধে তিনি প্রেসিডেন্সি কলেজে পদার্থবিজ্ঞানের ভারপ্রাপ্ত অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন। চাকরিতে ঢুকেই তিনি কলেজের অন্যান্য শিক্ষকদের মধ্যে তীব্র সাম্প্রদায়িকতা অনুভব করেন। কারণ ব্রিটিশ অধ্যাপকেরা যে বেতন পেত সেই তুলনায় তাঁর বেতন ছিলো বেশ নগণ্য। এই ব্যবস্থা তিনি মেনে নিতে পারেন নি। তাই প্রতিবাদ স্বরূপ তিনি প্রায় তিন বছর কোনো বেতন গ্রহণ করেন নি, কিন্তু অধ্যাপকের কাজ থেকেও বিচ্যুত হননি। এই তিন বছর তিনি শিক্ষার্থীদের পড়িয়ে গিয়েছেন বেতন ছাড়াই। পরে পাব্লিক ইন্সট্রাকশন ও প্রেসিডেন্সি কলেজের অধ্যক্ষের চেষ্টায় তাঁকে স্থায়ীভাবে অধ্যাপক হিসেবে নিয়ে নেয়া হয় এবং তাঁর তিন বছরের পুরো বেতন দিয়ে দেয়া হয়। 
আগামী শুত্রুবার ৩০শে নভেম্বর, ২০১৮ তার ১৬০তম জন্মবার্ষিকী। 

25 November 2018

জানেন কি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কাবুলিওয়ালা গল্পটি প্রথম কাকে শুনিয়ে ছিলেন-

কাবুলিওয়ালা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের রচিত একটি ছোটগল্প। গল্পে আফগান থেকে আসা এক ফল বিক্রেতার সাথে বাঙালি এক লেখকের ছোটো বাঙালি মেয়ের পরিচয় হয় এবং সে তাকে আফগানে ফেলে আসা মেয়ের মত ভালোবাসে। শুনলে অবাক হয়ে যাবেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কাবুলিওয়ালা গল্পটি প্রথম কাকে শুনিয়ে ছিলেন জানলে। গল্পটি শুনিয়ে ছিলেন  তার যুগে উনিশ শতকে অন্যতম শ্রেষ্ঠ বাঙালি বিজ্ঞানী জগদীশ চন্দ্র বসুকে।
জগদীশ চন্দ্র বসু আর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর দুজন  ছিলেন খুব প্রিয় বন্ধু। দু’জনে একসাথে সময় কাটাতেন শিলাইদহে পদ্মার বুকে বোটে চড়ে। বোটের ছাদে দু’জন চুপচাপ প্রকৃতির সান্নিধ্যে বসে থাকতেন। উপভোগ করতেন সূর্যের হেলে পড়ার দৃশ্যপট। এইসময় রবি ঠাকুর তার প্রিয় বন্ধুকে শোনাতেন তার নতুন কোনো লেখা কবিতা বা শোনাতেন সদ্য সুর দেয়া তার নতুন গান। আবার কথনো বা রবি ঠাকুরের নতুন কোনো গল্পের প্লট শোনাতেন আর পরম ভালবাসায় সেসব শুনতেন জগদীশ চন্দ্র।
একবার জগদীশ বসুকে দেখতে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর  তার বাড়িতে যান। সেখানে দেখা না পেয়ে তার জন্যে একগুচ্ছ চম্পক ফুল রেখে আসেন এবং তাকে তার সঙ্গে দেখা করতে বলেন। বিজ্ঞানী জগদীশ শর্ত দিলেন, তিনি যাবেন তবে তাকে গল্প শোনাতে হবে। প্রথম দিনের গল্পের আসরে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জগদীশ বসুকে যে গল্প বলেন তার নাম কাবুলিওয়ালা। স্যার জগদীশ এ গল্পের ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং এ গল্প ছাপানোর জন্য উৎসাহ প্রদান করেন। এটি ১৮৯২ সালে প্রকাশিত হয়। কাবুলিওয়ালা পরে বহু ভাষায় অনূদিত হয়ে ছোট গল্পের জগতে আলোড়ন সৃষ্টি করে।

জেনে নিন যতীন্দ্রনাথ দাস কেন জেলে আমরণ অনশন করেছিলেন-

ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে স্বাধীনতা সংগ্রামী যতীন্দ্রনাথ দাস এক স্মরণীয় নাম। তিনি যতীন দাস নামেও পরিচিত ছিলেন। ১৯০৪ সালের ২৭শে অক্টোবর কলকাতাতে তাঁর জন্ম। তাঁর আত্মত্যাগ, দেশের জন্য জীবন বলিদান আজও প্রতিটি ভারতবাসী তাঁকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরন করেন।  ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনে অনশন করে যাঁরা যাঁরা শহীদ হয়েছিলেন তাঁদের কয়েকজনের মধ্যে অন্যতম হলেন যতীন্দ্রনাথ দাস।
১৯২৩ সনে বিপ্লবী শচীন্দ্রনাথ সান্যাল কলকাতার ভবানিপুরে ঘাঁটি করলে তিনি এই দলে যোগ দেন। পরে দক্ষিণেশ্বরের বিপ্লবী দলের সংগেও তাঁর যোগাযোগ হয়। ১৯২৪ সালে যতীন্দ্রনাথ দাস গ্রেপ্তার হয়ে ময়মনসিংহ জেলে প্রেরিত হন। জেল কর্তৃপক্ষের আচরণের প্রতিবাদে যতীন্দ্রনাথ দাস ও পান্নালাল মুখার্জী  অনশন  শুরু করেন এবং দীর্ঘ ২২ দিন পর ডি আই জি লেম্যানের হস্তক্ষেপে তাঁরা অনশন তুলে নেন। ১৯২৮ সালের অক্টোবর মাসে তিনি মুক্তি পান।
সারা দেশ যখন লালা লাজপৎ রায়ের শোচনীয় মৃত্যু নিয়ে  বিক্ষুব্ধ; সেদিন তা প্রকাশের ভাষা দিয়েছিল বিপ্লবী ভগৎ সিং ও বিপ্লবী বটুকেশ্বর দত্ত। তাঁরা অ্যাসেম্বলি হলে একটি উন্মুক্ত স্থানে কোনো মানুষকে হত্যা না করে সজোরে একটি বোমা নিক্ষেপ করে। বোমা বানাতে যতীন্দ্রনাথ দাস পারদর্শী ছিলেন। বোমা নিক্ষেপের ঘটনা একই দলের কাজ- এই অনুমানের উপর ভিত্তি করে একটি ষড়যন্ত্রের মামলা সরকারি পরিকল্পনায় সংঘটিত হয়, যার নাম দেওয়া হয় ‘লাহোর ষড়যন্ত্র মামলা’।এই মামলায় অভিযুক্ত হয়ে ১৯২৯ সালের ১৪ জুন আত্মত্যাগী, সাহসী যতীন্দ্রনাথ দাসকে তাঁর কলকাতার বাড়ি থেকে লাহোর পুলিশের নির্দেশে গ্রেপ্তার করা হয় এবং লাহোর জেলে প্রেরণ করা হয়।
সে সময় স্বাধীনতা সংগ্রামী বন্দিদের সাধারণ অপরাধী হিসাবে বিচার করা হতো। অনান্য ও ইউরোপিয়ান অপরাধীদের জেলের মধ্যে যে ভাবে রাখা হতো  তার থেকে অনেক খারাপ পরিবেশে স্বাধীনতা সংগ্রামী বন্দিদের রাখা হতো। সাথে চলত অকথ্য অত্যাচার ও  দুর্ব্যবহার। খাবারের মান ছিল খারাপ। খবরের কাগজ বা বই পড়ার কোনো সুযোগ থাকতনা। তাছারা জেলের মধ্যের পরিবেশ ছিল অস্বাস্থ্যকর। জেলের ভেতর রাজনৈতিক বন্দিদের মর্যাদার দাবীতে এবং মানবিক সুযোগ সুবিধার আন্দোলন শুরু হয় এবং তা ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছিল। ১৩ জুলাই থেকে ভগৎ সিং ও বটুকেশ্বর দত্তের সমর্থনে যতীন্দ্রনাথ অনশন সংগ্রাম আরম্ভ করে। যতীন্দ্রনাথ  ছাড়া আর কারো অনশন আন্দোলনের অভিজ্ঞতা ছিল না। ভাবাবেগে চালিত হয়ে অনশন সংগ্রামে যোগ দিতে নিষেধ করেছিল অন্য সাথীদের। তিনি বলেছিলেন  রিভলবার পিস্তল নিয়ে লড়াই করাই চেয়ে অনেক বেশি কঠোর এক অনশন সংগ্রামে আমরা নামছি। অনশন সংগ্রামীকে তিল তিল করে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যেতে হয়। যতীন দাস আরো বলেন, সে নিজে অনশন আরম্ভ করলে যতদিন না সরকার দাবী মেনে না নেয়, ততদিন অনশন চালিয়ে যাবে। যতীন্দ্রনাথের হুশিয়ারি সত্ত্বেও পূর্ব সিদ্ধান্ত অনুযায়ী  অনশন শুরু হয়। এই সময় তাঁকে বহুবার জোর করে খাওয়াবার চেষ্টা করা হয়। এমন কি সেলের মধ্যেও বিভিন্ন খাবার ও পানীয় রাখা থাকত যাতে তিনি খাবার খেয়ে অনশন তুলে নেন। কিন্তু তিনি ছিলেন অনড়। এমন কি তিনি ডাক্তারের ওষুধ পর্যন্ত মুখে নেন নি। দীর্ঘ ৬৩ দিন অনশনের পর তিনি ১৯২৯ সালের ১৩ই সেপ্টেম্বর মারা যান।এইভাবে মৃত্যুবরণ করার ফলে বন্দিদের  উপর অত্যাচার প্রশমিত হয়েছিলো এবং তাদের রাজবন্দির মর্যাদা দেওয়া শুরু হয়েছিল।



24 November 2018

মোদি বিশ্বের উচ্চতম মূর্তি "স্ট্যাচু অফ ইউনিটি" বানালেন কেন?



গত ৩১শে অক্টোবর ২০১৮ "স্ট্যাচু অফ ইউনিটি" উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলের ১৪৩তম জন্মবার্ষিকী উপলখ্যে তাঁর এই  মূর্তি উন্মোচন করা  হয়। বর্তমানে স্ট্যাচু অফ ইউনিটি হলো বিশ্বের  উচ্চতম মূর্তি যার উচ্চতা  ১৮২ মিটার অর্থাৎ ৫৯৭ ফুট। যেখানে ভারতীয়রা যখন মূর্তি নিয়ে গর্ববোধ করছেন সেখানেই কিছু বিরোধী দল ও নিউজ চ্যানেল এই মূর্তির প্রতিবাদ করেছেন।  তাদের দাবি সরকারের টাকা এভাবে নষ্ট করা হচ্ছে কেন? কিছু লোক বলছে ওই টাকায় ৬টা আই আই এম, ৬টা আই আই টি আর ১টা ভাবা রিসার্চ সেন্টার খোলা হয়ে যেত।  অনেক স্কুল, কলেজ আর হাসপাতালও খোলা যেত। কেউ কেউ বললো ৩০০০ কোটি টাকা খরচ করে কাকেদের মুত্র ত্যাগ করার জায়গা বানানো হলো।
আসল ব্যাপার হল নরেন্দ্র মোদি গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন রাজ্যের পর্যটন শিল্পের উন্নয়নের জন্য বিশেষ মনোযোগ দিয়ে ছিলেন। বিগ বি অমিতাভ বচ্চনকে গুজরাতের পর্যটন শিল্পের বানিজ্যিক মুখপাত্র হিসাবে নিয়োগ করেন এবং বিরাট সাফল্য অর্জন করেন। টিভি তে "খুসবু গুজরাত কি" র প্রচার বেশ জনপ্রিয় হয়েছে। নরেন্দ্র মোদি গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন ২০১৩ সালে এই মূর্তি স্থাপনের কাজ শুরু হয় এবং নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ২০১৮ সালে মূর্তির কাজ শেষ হয়। এখানে চিন, জাপান ও আমেরিকাকে পেছনে ফেলে ভারত এগিয়ে গেল। গুজরাটের নর্মদা জেলার ছোট্ট একটি দ্বীপে তৈরি করা এই মূর্তিটি এখন বিশ্বের সর্বোচ্চ মূর্তি  যেটা আমেরিকায় স্ট্যাচু অফ লিবার্টির প্রায় দ্বিগুণ। এই প্রকল্পের মূল টাকা জোগান দেয় গুজরাত  সরকার ও পাবলিক সেক্টর আন্ডারটেকিং এর "কর্পোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতা" পরিকল্পনা একাউন্ট। যে জায়গায় মূর্তি বসানো হয় তার পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে উপযুক্ত রাস্তাঘাট, হোটেল, পরিবহণ ও অনান্য পরিষেবার উন্নতি হচ্ছে। মূর্তি দেখার জন্য দিন দিন পর্যটকের সংখ্যা বেড়ে চলেছে। বিদেশী পর্যটকের প্রচুর পরিমাণে আগমনও হচ্ছে। সরকারের তরফ থেকে দাবি উঠেছে স্ট্যাচু অফ ইউনিটি নির্মাণের পর থেকে রাজ্যে চাকরির সংখ্যাও বৃদ্ধি পেয়েছে এবং ভবিষ্যতে আরও চাকরির সম্ভাবনা বাড়বে কারণ স্ট্যাচু অব ইউনিটির কাছাকাছি তৈরি হবে এয়ারপোর্ট, স্টেশন ও নানারকম পরিষেবা। সরকারের এখন এটাই প্রধান লক্ষ্য যে কিভাবে বেশি সংখ্যক পর্যটককে আনা যায় এবং রাজকোষ  ভর্তি করে তোলা যায়। মূর্তি উন্মোচনের সময় যেসব দলগুলি সমালোচনা করেছিল তারা এখন চুপ।  আগে ইন্ডিয়া বা ভারতবর্ষ বলতে বিদেশী পর্যটকদের কাছে শুধু তাজমহল বোঝাতো। এখন সংযোজন হল স্টাচু অফ ইউনিটি। নরেন্দ্র মোদি সারা বিশ্বকে বোঝালেন ভারতবর্ষ আর আগের মতন গরীব দেশ নয়। তাদের মূর্তি বানাবার জন্য ৩০০০ কোটি টাকা খরচ করার মত সামর্থ আছে। সারা বিশ্ব জানতে পেরেছে ভারতের প্রধানমন্ত্রী কে এবং তিনি কি কাজ করলেন। সেই সংগে তিনি গুজরাতকে ভারতের অনান্য রাজ্য থেকে এগিয়েও রাখলেন।। ২৩.১১.২০১৮



21 November 2018

কালিপুজোয় পরিবেশ এবং শব্দ দূষণ ও সুপ্রিম কোর্টের রায়ঃ ৮.১১.২০১৮


কালিপুজোয় পরিবেশ এবং শব্দ দূষণ ও সুপ্রিম কোর্টের রায়ঃ ৮.১১.২০১৮

এখন রাত্রি ৮টা। বাইরে ত্বারস্বরে মাইক বাজছে। আজ কালি পুজোর বিসর্জনের দিন। পাশের ক্লাবের পুজোর আজ বিসর্জন হবে না। সেখানে চলছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সাধারণ ভাবে রাত ১০টার পর মাইক বাজানো নিষেধ। তাছারা লাউডস্পিকারের শব্দের মাত্রা ৬৫ ডেসিবলে বেঁধে দেওয়া আছে। কিন্তু হাই ওয়াটের সাউন্ড সিস্টেমের সাথে মাইকের আওয়াজ কটা অবধি চলবে জানি না। সাধারণ মানুষের শান্তিতে থাকার অধিকার খর্ব করা হচ্ছে। এটা শব্দ দূষনণের মধ্যে পরে। এ সব ক্ষেত্রে উদ্যোগতারা লোকাল থানার সাথে বোঝাপড়া করে নেয়। উদ্দ্যোগতাদের নেতা গোছের কেউ থানার ওসি কে ফোন করে বললো আমরা পুজো প্যান্ডেলের সামনে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করবো এবং চলবে রাত ১২টা পর্যন্ত। ওসি আঁতকে উঠে বলবেন না না হবে না। ওটা খুব জোর  ১১ টা পর্যন্ত চলতে পারে। ওপারে নেতার আকুতি মিনতির পর ওসি বলবেন আপনার কথা থাক আর আমার কথা থাক, ওটা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত রইল। কিন্তু কার্যত সেটা মধ্যরাত পর্যন্ত গড়িয়ে যায়। লোকাল লোকেরা ভয়ে থানায় অভিযোগ জানায় না। সাহস করে কেউ ফোন করলে তাকে মানিয়ে  নিতে বলে।

আমরা যখন ছোট ছিলাম সেই ৬০-৭০ দশকে সারা রাত্রি ব্যাপি মাইক বাজিয়ে পাড়ায় রাস্তা জুড়ে ফাংশন হত। সেই সময় বউবাজারের বাড়ির আশেপাশে মোটামুটি তিনটি  জায়গায় রাস্তা জুড়ে সারা রাত্রিব্যাপি ফাংশন হত। একটা হিদারাম ব্যানার্জী ও মদন দত্ত লেনের সংযোগ স্থলে। আর একটা হলধর বর্ধন লেন ও রাম কানাই অধিকারী লেনের সংযোগ স্থলে। আর একটা হত বড় করে শশীভূষণ দে স্ট্রীটের ওপর। এসব জায়গায় বাংলার শিল্পীরা আসতেন। আজও  মনে পড়ে হেমন্ত মুখার্জীর সাদা ধুতি পাঞ্জাবী পরে স্টেজের ওপর বসে হারমনিয়াম নিয়ে "ও নদীরে একটি কথা",  "আয় খুকু আয়", "এই পথ যদি না শেষ হয়" এর মত হিট হিট গান গেয়ে স্টেজ মাতিয়ে রাখতেন।  উনি মাঝরাত্রের একটু আগে স্টেজে উঠতেন। গান চলাকালীন শ্রোতাদের কাছ থেকে ছোট্ট কাগজের মধ্যে গানের অনুরোধ যেত। গান শেষ করে উঠে যাবার সময়  "আর একটা আর একটা" বলে চিৎকার উঠত।  শ্রোতাদের অনুরোধ রাখতেন।
কাঞ্চন বলে একজন  শিল্পী সাফারী সুট পড়ে তখন কার হিট গান গুলো মহিলা কন্ঠে গাইতেন। বেশ পপুলার ছিলেন। মাঝে জহর বা ভানুর হাস্যকৌতুক। আর সব থেকে বেশি আর্কষণ ছিল ভোর রাত্রে হিন্দি গানের তালে রুমকি ঝুমকির নাচ। ঝকমকি ড্রেস পরে  পেছন ফিরে হাতে কলকে নিয়ে রুমকির স্টেজে ঢোকা আর দম মারো দম গানের তালে নাচ। এগুলি সাধারণত শীতকালে হত। দুর্গা পুজোর পর নেবুতলা মাঠের জলসায় বোম্বের শিল্পীদের দেখা যেত। তাছারা  কালি পুজোর সময় কংগ্রেসের দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা কৃষ্ণচন্দ্র দত্ত ওরফে ফাটাকেষ্টর সীতারাম ঘোষ স্ট্রিটের আর সোমেন মিত্রের আমহার্স্ট স্ট্রিট ও কেশব সেন স্ট্রিটের মুখে স্টেজে বা মাচা শোয়ে বাংলার এবং বোম্বের নাম করা  আর্স্টিস্টদের উপস্থিতি কারোর অজানা নয়।  তার মধ্যে রাজেশ খান্না, অমিতাভ বচ্চন, রাহুল দেব বর্মন, আশা ভোঁশলেও ফাটাকেষ্টর শোয়ে উপস্থিত  ছিলেন। আম পাবলিকের কাছে তিনি ফাটাকেষ্ট নামে পরিচিতি থাকলেও  ক্লোসড সার্কেলে উনি ছিলেন কেষ্টদা। ঠাকুর দেখতে আসা কেউ একজন ফাটাকেষ্ট বলাতে ক্লাবের ছেলেরা তাকে রাস্তার উপর কান ধরে ওঠবোস করায়। সেই সময় লাউডস্পিকার বাজানোর সময় সীমা নিয়ে কড়াকড়ি সেরকম ছিল না। তাছারা পাবলিক ও থুব বেশী প্রতিবাদ মুখর ছিলেন না।
এখনকার  সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান কলকাতা ও তার আশেপাশে সাধারণত দুর্গা, কালি ও সাম্প্রতিক কালের জগদ্ধাত্রী পুজোর সময়  বেশী হচ্ছে। সন্ধ্যের পর  শুরু হয় চলে অধিক রাত্রি পর্যন্ত। শিল্পীর গানের গলার থেকে হাই ভোল্টেজ মিউজিক সিস্টেমের আওয়াজ বেশী শোনা যায়। আর গানের মাঝে "কি ভালো লাগছে তো, তাহলে একটা জোরে হাততালি হয়ে যাক" গোছের আবদার শিল্পীর কাছ থেকে আসে।
সময় পালটেছে। এখন আর ওপেন ফাংশন রাস্তা জুড়ে  সারা রাত্রি  হয়না। সে হিসাবে অবস্থার উন্নতি হয়েছে বলা যায়। তবে এখন হাই ওয়াটের সাউন্ড সিস্টেমের গুম গুম শব্দে খাট শুদ্ধু কেঁপে ওঠে।

শব্দ ও পরিবেশ দূষণের আর একটি কারণ কালি পুজো ও অন্যান্য  উৎসবে আতসবাজির সাথে শব্দ বাজি পোড়ানো। এই সময় শব্দ ও পরিবেশ দূষণের মাত্রা অত্যাথিক বেড়ে  যায় এবং পরিবেশ দূষিত হয়। শব্দ দূষণের কারণে শ্রবণ শক্তি, হার্ট, ফুসফুসের ক্ষতি বেশী রকম হয়।  এর কুফল মানুষ এবং পশুপাখি উভয়ের উপরেই পড়ে। আমাদের ছোটবেলায় কালিপুজোর সময় প্রচুর আতস ও শব্দবাজি পাড়ার গলিতে পোড়াতাম। তখন শব্দ ও পরিবেশ দূষণের ব্যাপার আমাদের মাথায় ছিল না। আমাদের বাড়ির নিচের তলায় সার্বজনিন এক মামা ছিলেন। উনি প্রতি কালিপুজোয়  বড়বাজার থেকে প্রচুর আতস ও শব্দ বাজি কিনে আনতেন আর আমাদের দিয়ে পোড়াতেন। ফুলঝুরি, রংমশাল, চরকি, বসানো তুবরি, উরন তুবরি,সাইরেনের সাথে সাথে কালিপটকা, চকলেট বোম, আলু বোম, দোদমা, রকেট ফাটাতাম।  বারুদের ধোয়া আর গন্ধে চারিদিক ভরে উঠতো। খুব আনন্দ হত।  তাছারা বিসর্জনের দিন ঠাকুরকে লরিতে চাপিয়ে ঢাকির তলে নাচতে নাচতে সারা রাস্তায় বাজি পোড়তে পোড়াতে বাবুঘাটে যাওয়া ছিল আলাদা মজা ছিল।
 আমাদের পাড়ার হলধর বর্ধন লেনের ৪৫ পল্লীর ঠাকুর বিসর্জনের রুট ছিল হিদারাম ব্যানার্জী লেন থেকে বেড়িয়ে নির্মল চন্দ্র স্ট্রীট ধরে ওয়েলিংটন মোড় পেড়িয়ে ডান দিকের এস এন ব্যানার্জী রোড ধরে  ইডেন গার্ডেন কে ডান হাতে রেখে সোজা বাবুঘাট। তখন এখনকার মতন ব্যাঞ্জর  প্রচলন  ছিল না। বিসর্জনের আগে ঘাটেও বাজি পুড়তো। বিশেষ করে বসানো তুবরির প্রদর্শণ ছিল দেখার মত। সারা বছর ঐ দিনগুলোর  জন্য অপেক্ষা  করতাম। ফাটাকেস্টর নব যুবক সংঘের ঠাকুর ১৪- ১৫ দিন পর ভাসান হত। ওদের ঠাকুর বিসর্জন ছিল জাঁকজমক পূর্ণ।  ১০৮ টা লাইটের গেট, ব্যান্ড পার্টি, ঢাকের বহর সবাইকে টেক্কা দিত। বিরাট শোভাযাত্রার সাথে নিমতলার ঘাটে ঠাকুর বিসর্জন হত। আমার এক বন্ধু সীতারাম ঘোষ স্ট্রীটের কাছে কলেজস্ট্রীতে থাকত।  তার সাথে একবার সেই শোভাযাত্রায় যোগদান করে ছিলাম। শোভাযাত্রা সুস্থ  ভাবে পরিচালনা করে নিয়ে যাবার জন্য উদ্দ্যোক্তাদের ছেলেদের মধ্যে থাকত ব্যাপক তৎপড়তা এবং টান টান উত্তেজনা। তারা রাস্তায় সব সব রকমের সমস্যা মোকাবিলা করার মত প্রস্তুতিতে থাকত।  তবে সেই শোভাযাত্রায় বিশাল  রকমের বাজি পোড়াবার কথা মনে পড়ে না।
কিন্তু এখন বাজি পোড়াবার সময় শব্দ ও পরিবেশ দূষণের ব্যাপার চলে আসছে। সাথে থাকছে পুলিশের ভয়।
১৯৯৭ সালে বিচারক ভগবতী প্রসাদ ব্যানার্জী মহাশয়ের রায় খুবই উল্লেখ্যোগ্য। তখন থেকে এ রাজ্যে বাজির শব্দের মাত্রা ৯০ ডেসিবল বেঁধে দেওয়া হয়।
এবারের ২০১৮ সালের কালিপুজো এবং দেওয়ালির প্রাকালে ভারতের সর্বোচ্চ আদালত একটি রায় দেয়। সেখানে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে শুধুমাত্র লাইসেন্স প্রাপ্ত ডিলার বা দোকানদাররা অনুমতিপ্রাপ্ত বাজি বিক্রি করতে  পারবে এবং  রাত ৮ টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত মানে ২ ঘন্টা বাজি পোড়ানো যাবে।  তাছারা লোএমিশণ বা গ্রিন বাজি পোড়াবার কথা বলা হয়েছে।এই রায় কার্যকরি করার ভার থানার স্টেশন হাউস অফিসারের ওপর  থাকবে। কলকাতা পুলিশ  নিষিদ্ধ ১০৫ টা বাজির লিস্ট তৈরী করেছে। মোদ্দা কথা যে সব বাজির আওয়াজ কানের পক্ষে বেদনা দায়ক সেগুলি নিষিদ্ধ।
এই নির্দেশ কতটা মান্য করা হবে সে বিষয়ে সর্বস্তরের মানুষের একটা সন্দেহ ছিল। কার্যত তাই হল। মানুষ সময়ের তোয়াক্কা না করে আতসবাজী আর শব্দ বাজী পুড়িয়ে যাচ্ছে। পরিবেশ দূষণের মাত্রা ৪ গুন বেড়ে গেছে। শব্দ বাজির ভীষন শব্দে প্রাণ যায় যায়। আমার বাড়ীতে ছোট্ট একটা কুকুর আছে। সে বাজির শব্দে কেঁপে উঠছে।  কোথায় গিয়ে আশ্রয় নেবে ভেবে পাচ্ছে না। আর রাস্তার কুকুর, বেড়াল, পাখিদের অবস্থা সহযেই অনুমেয়।
দেশের সর্বোচ্চ আদালতের রায় অমান্য হয়েছে। বিনা লাইসেন্সে দেদার বাজি রাস্তায় ঢেলে বিক্রি হয়েছে। বাজির কারখানা গুলোতে  নজরদারী ছিল না। নির্দিষ্ট সময়ের বাইরে বাজি পুড়েছে। সেই সংগে নিষিদ্ধ বাজিও প্রচুর পুড়েছে।এর জন্য প্রাথমিক ভাবে পুলিশ প্রসাশন কে দায়ী করা যায়। কিন্তু প্রশ্ন থাকছে কেউ যদি বাজি ফাটিয়ে ঘরে ঢুকে যায় বা লুকিয়ে যায় তাহলে পুলিশ কি করবে। আবার এটাও দেখা গেছে  রাস্তার ওপর সবার সামনে বাজি পোড়াচ্ছে। সেখানে কোনো পুলিশের দেখা নেই। এই আইন অমান্য করায় পুলিশ  ধর পাকড়ও করেছে। অনেক ক্ষেত্রে ছোটরা  নিষিদ্ধ বাজি আনন্দ করে পোড়াচ্ছে। তাদের ওপর আইন প্রয়োগ করাটাও সব সময় সম্ভব হয় না। তবে কিছু বেয়াদপ ছেলেদের ধরেছে। এক জনকে ধরে  মাথা নেড়া করে থানায় বসিয়ে রাখতে দেখেছি। কালিপুজো ও দেওয়ালিতে কলকাতা শহরাঞ্চলে পুলিশ প্রায় ২৫০০ কেজি নিষিদ্ধ বাজি বাজায়াপ্ত করেছে এবং ১০২৯ জনকে গ্রেফতার করেছে।  সামগ্রিক ভাবে এই ব্যর্থতার জন্য পুলিশ প্রসাশনকে আদালতের কাঠগোড়ায় টেনে আনা যায়। এর বিচার কে করবে।
এত গেল আইনের কথা। মূল ব্যর্থতার কারণ হল সাধারণ মানুষের মধ্যে পরিবেশ বিষয়ে সচেতনতার অভাব এবং আদালতের রায় মানার অনীহা। এর জন্য চাই বিপুল প্রচার এবং বাজি  তৈরীর কারখানাগুলোর ওপর বাড়তি নজরদারী। স্কুল ও কলেজ গুলিতে ব্যাপক প্রচার দরকার। ২০১৮ সালের সুপ্রিম কোর্টের রায় শব্দ ও পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণ করার একটা গুরুত্বপূর্ণ মাইলস্টোন। আগে কালিপুজো আর দেওয়ালিতে সারা রাত ধরে শব্দ বাজি পুড়তো। এখন সেটা অনেক কমে এসেছে। আশা করব আগামী দিনে আমরা এ বিষয়ে আরোও সচেতন হব এবং নতুন প্রজন্মকে সুন্দর পরিবেশ উপহার দেবো।

12 November 2018

রান্নার গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি

কলকাতায় বর্তমানে  ভর্তুকি বিহীন ১৪.২ কেজি রান্নার গ্যাসের দাম বেড়ে প্রতি সিলিন্ডারে হল ৯৭১.৫০ টাকা। গত জুন মাস থেকে লাগাতার ভাবে এর দাম বেড়ে চলেছে। রান্নার গ্যাসের বাজার দর নির্ধারিত হয় গড় আন্তর্জাতিক বেঞ্চমার্ক এল পি জি এবং বিদেশী মুদ্রা বিনিময় দরের ভিত্তিতে। সাধারন ভাবে গাসের বাজার দর বাড়লে গাসের ভর্তুকিও বাড়ে।  তাই এখানে সাধারন গ্রাহকদের বিশেষ চাপ পরে না। প্রাথমিক ভাবে তাদের পকেট থেকে বাড়তি টাকা বার করতে হয়। পরে টাকা ভর্তুকি হিসাবে তাদের ব্যাংক একাউন্টে জমা হয়।
এই দাম বাড়ার জন্য বিশেষ করে যারা ভর্তুকি পান না এবং "গিভ আপ সাবসিডি" প্রকল্পে যারা স্বইচ্ছায় ভর্তুকি নেন না তাদের পকেটে টান পড়বে। বর্তমানে এর আওতায় প্রায় ১ কোটি গ্রাহক আছেন।গত জুন মাসে যে গ্যাসের দাম ছিল ৬৭৪ টাকা বর্তমানে তা গিয়ে দাঁড়িয়েছে ৯৭১ টাকায়। অর্থাৎ ২৯৭ টাকা বেশি গুনতে হচ্ছে। এই প্রকল্পের অর্জিত টাকা অন্যান্য গ্রাহকদের অতিরিক্ত ভর্তুকিতে দিতে খরচ হয়ে যাচ্ছে।  গিভ আপ সাবসিডির প্রকল্পের গ্রাহকরা চিন্তায় পড়লেন। ভাবছেন তাহলে কি ভুল করলাম।

প্রধানমন্ত্রীর আর একটি  প্রকল্প আছে সেটা হল উজ্জ্বলা যোজনা। এই প্রকল্পটি শুরু হয় ২০১৬ সালে এবং লক্ষ্য আছে ২০১৯ এর মধ্যে ৫ কোটি বিপিএল পরিবারের মহিলাদের বিনা মূল্যে গ্যাসের সংযোগ দেওয়া। বর্তমানে ৩.৫০ কোটি মহিলাদের এই সংযোগ দেওয়া হয়ে গেছে। কিন্তু যে হারে গ্যাসের নতুন সংযোগ বাড়ছে সেই আনুপাতে গাস সিলিন্ডারের চাহিদা বাড়ছে না। তার অন্যতম কারণ গ্যাস সিলিন্ডারের চলতি বাজার দর। বিপিএল পরিবারদের পরবর্তি গ্যাসের জন্য ৯৭১ টাকা খরচ করতে গায়ে লাগবে। যেখানে প্রায় বিনা খরচে জ্বালানি পাওয়া যাচ্ছে সেখানে এত টাকা কেন খরচ করবে। গ্রামাঞ্চলে জ্বালানি হিসাবে গাছের ডাল-পালা, পাটকাটি, গোবরের কোনো অভাব নেই। তাছারা চলতি বাজার দর দিয়ে গ্যাস কিনলে আপাতত ভর্তুকির টাকা তাদের ব্যাংকে জমা হবে না। বিনামূল্যে গ্যাসের সংযোগ দেওয়া হলেও নতুন গ্যাস স্টোভ ও অনান্য  বাবদ ১৫০০ টাকা যে খরচ হয় সেটা তাদের লোন হিসাবে দেওয়া হয়েছে। লোনের টাকা গ্যাসের ভর্তুকির টাকা থেকে মেটানো হবে। নতুন সিলিন্ডার নিলে ভর্তুকির টাকা গ্রাহকদের কাছ না গিয়ে সেটা লোন মেটাতে চলে যাবে। তাই বিপিএল গ্রাহকরা দ্বিতীয় বার গ্যাস সিলিন্ডার নেবার আগ্রহ দেখাচ্ছে না। সুতরাং গ্যাসের এই ক্রমবর্ধমান বাজার দর বৃদ্ধি জন্য প্রকল্পটির জনপ্রিয়তা ও উদ্দেশ্য হারাতে বসেছে।
আপনাদের মতামত জানান।