12 November 2018

রান্নার গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি

কলকাতায় বর্তমানে  ভর্তুকি বিহীন ১৪.২ কেজি রান্নার গ্যাসের দাম বেড়ে প্রতি সিলিন্ডারে হল ৯৭১.৫০ টাকা। গত জুন মাস থেকে লাগাতার ভাবে এর দাম বেড়ে চলেছে। রান্নার গ্যাসের বাজার দর নির্ধারিত হয় গড় আন্তর্জাতিক বেঞ্চমার্ক এল পি জি এবং বিদেশী মুদ্রা বিনিময় দরের ভিত্তিতে। সাধারন ভাবে গাসের বাজার দর বাড়লে গাসের ভর্তুকিও বাড়ে।  তাই এখানে সাধারন গ্রাহকদের বিশেষ চাপ পরে না। প্রাথমিক ভাবে তাদের পকেট থেকে বাড়তি টাকা বার করতে হয়। পরে টাকা ভর্তুকি হিসাবে তাদের ব্যাংক একাউন্টে জমা হয়।
এই দাম বাড়ার জন্য বিশেষ করে যারা ভর্তুকি পান না এবং "গিভ আপ সাবসিডি" প্রকল্পে যারা স্বইচ্ছায় ভর্তুকি নেন না তাদের পকেটে টান পড়বে। বর্তমানে এর আওতায় প্রায় ১ কোটি গ্রাহক আছেন।গত জুন মাসে যে গ্যাসের দাম ছিল ৬৭৪ টাকা বর্তমানে তা গিয়ে দাঁড়িয়েছে ৯৭১ টাকায়। অর্থাৎ ২৯৭ টাকা বেশি গুনতে হচ্ছে। এই প্রকল্পের অর্জিত টাকা অন্যান্য গ্রাহকদের অতিরিক্ত ভর্তুকিতে দিতে খরচ হয়ে যাচ্ছে।  গিভ আপ সাবসিডির প্রকল্পের গ্রাহকরা চিন্তায় পড়লেন। ভাবছেন তাহলে কি ভুল করলাম।

প্রধানমন্ত্রীর আর একটি  প্রকল্প আছে সেটা হল উজ্জ্বলা যোজনা। এই প্রকল্পটি শুরু হয় ২০১৬ সালে এবং লক্ষ্য আছে ২০১৯ এর মধ্যে ৫ কোটি বিপিএল পরিবারের মহিলাদের বিনা মূল্যে গ্যাসের সংযোগ দেওয়া। বর্তমানে ৩.৫০ কোটি মহিলাদের এই সংযোগ দেওয়া হয়ে গেছে। কিন্তু যে হারে গ্যাসের নতুন সংযোগ বাড়ছে সেই আনুপাতে গাস সিলিন্ডারের চাহিদা বাড়ছে না। তার অন্যতম কারণ গ্যাস সিলিন্ডারের চলতি বাজার দর। বিপিএল পরিবারদের পরবর্তি গ্যাসের জন্য ৯৭১ টাকা খরচ করতে গায়ে লাগবে। যেখানে প্রায় বিনা খরচে জ্বালানি পাওয়া যাচ্ছে সেখানে এত টাকা কেন খরচ করবে। গ্রামাঞ্চলে জ্বালানি হিসাবে গাছের ডাল-পালা, পাটকাটি, গোবরের কোনো অভাব নেই। তাছারা চলতি বাজার দর দিয়ে গ্যাস কিনলে আপাতত ভর্তুকির টাকা তাদের ব্যাংকে জমা হবে না। বিনামূল্যে গ্যাসের সংযোগ দেওয়া হলেও নতুন গ্যাস স্টোভ ও অনান্য  বাবদ ১৫০০ টাকা যে খরচ হয় সেটা তাদের লোন হিসাবে দেওয়া হয়েছে। লোনের টাকা গ্যাসের ভর্তুকির টাকা থেকে মেটানো হবে। নতুন সিলিন্ডার নিলে ভর্তুকির টাকা গ্রাহকদের কাছ না গিয়ে সেটা লোন মেটাতে চলে যাবে। তাই বিপিএল গ্রাহকরা দ্বিতীয় বার গ্যাস সিলিন্ডার নেবার আগ্রহ দেখাচ্ছে না। সুতরাং গ্যাসের এই ক্রমবর্ধমান বাজার দর বৃদ্ধি জন্য প্রকল্পটির জনপ্রিয়তা ও উদ্দেশ্য হারাতে বসেছে।
আপনাদের মতামত জানান।

1 comment: