24 November 2018

মোদি বিশ্বের উচ্চতম মূর্তি "স্ট্যাচু অফ ইউনিটি" বানালেন কেন?



গত ৩১শে অক্টোবর ২০১৮ "স্ট্যাচু অফ ইউনিটি" উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলের ১৪৩তম জন্মবার্ষিকী উপলখ্যে তাঁর এই  মূর্তি উন্মোচন করা  হয়। বর্তমানে স্ট্যাচু অফ ইউনিটি হলো বিশ্বের  উচ্চতম মূর্তি যার উচ্চতা  ১৮২ মিটার অর্থাৎ ৫৯৭ ফুট। যেখানে ভারতীয়রা যখন মূর্তি নিয়ে গর্ববোধ করছেন সেখানেই কিছু বিরোধী দল ও নিউজ চ্যানেল এই মূর্তির প্রতিবাদ করেছেন।  তাদের দাবি সরকারের টাকা এভাবে নষ্ট করা হচ্ছে কেন? কিছু লোক বলছে ওই টাকায় ৬টা আই আই এম, ৬টা আই আই টি আর ১টা ভাবা রিসার্চ সেন্টার খোলা হয়ে যেত।  অনেক স্কুল, কলেজ আর হাসপাতালও খোলা যেত। কেউ কেউ বললো ৩০০০ কোটি টাকা খরচ করে কাকেদের মুত্র ত্যাগ করার জায়গা বানানো হলো।
আসল ব্যাপার হল নরেন্দ্র মোদি গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন রাজ্যের পর্যটন শিল্পের উন্নয়নের জন্য বিশেষ মনোযোগ দিয়ে ছিলেন। বিগ বি অমিতাভ বচ্চনকে গুজরাতের পর্যটন শিল্পের বানিজ্যিক মুখপাত্র হিসাবে নিয়োগ করেন এবং বিরাট সাফল্য অর্জন করেন। টিভি তে "খুসবু গুজরাত কি" র প্রচার বেশ জনপ্রিয় হয়েছে। নরেন্দ্র মোদি গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন ২০১৩ সালে এই মূর্তি স্থাপনের কাজ শুরু হয় এবং নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ২০১৮ সালে মূর্তির কাজ শেষ হয়। এখানে চিন, জাপান ও আমেরিকাকে পেছনে ফেলে ভারত এগিয়ে গেল। গুজরাটের নর্মদা জেলার ছোট্ট একটি দ্বীপে তৈরি করা এই মূর্তিটি এখন বিশ্বের সর্বোচ্চ মূর্তি  যেটা আমেরিকায় স্ট্যাচু অফ লিবার্টির প্রায় দ্বিগুণ। এই প্রকল্পের মূল টাকা জোগান দেয় গুজরাত  সরকার ও পাবলিক সেক্টর আন্ডারটেকিং এর "কর্পোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতা" পরিকল্পনা একাউন্ট। যে জায়গায় মূর্তি বসানো হয় তার পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে উপযুক্ত রাস্তাঘাট, হোটেল, পরিবহণ ও অনান্য পরিষেবার উন্নতি হচ্ছে। মূর্তি দেখার জন্য দিন দিন পর্যটকের সংখ্যা বেড়ে চলেছে। বিদেশী পর্যটকের প্রচুর পরিমাণে আগমনও হচ্ছে। সরকারের তরফ থেকে দাবি উঠেছে স্ট্যাচু অফ ইউনিটি নির্মাণের পর থেকে রাজ্যে চাকরির সংখ্যাও বৃদ্ধি পেয়েছে এবং ভবিষ্যতে আরও চাকরির সম্ভাবনা বাড়বে কারণ স্ট্যাচু অব ইউনিটির কাছাকাছি তৈরি হবে এয়ারপোর্ট, স্টেশন ও নানারকম পরিষেবা। সরকারের এখন এটাই প্রধান লক্ষ্য যে কিভাবে বেশি সংখ্যক পর্যটককে আনা যায় এবং রাজকোষ  ভর্তি করে তোলা যায়। মূর্তি উন্মোচনের সময় যেসব দলগুলি সমালোচনা করেছিল তারা এখন চুপ।  আগে ইন্ডিয়া বা ভারতবর্ষ বলতে বিদেশী পর্যটকদের কাছে শুধু তাজমহল বোঝাতো। এখন সংযোজন হল স্টাচু অফ ইউনিটি। নরেন্দ্র মোদি সারা বিশ্বকে বোঝালেন ভারতবর্ষ আর আগের মতন গরীব দেশ নয়। তাদের মূর্তি বানাবার জন্য ৩০০০ কোটি টাকা খরচ করার মত সামর্থ আছে। সারা বিশ্ব জানতে পেরেছে ভারতের প্রধানমন্ত্রী কে এবং তিনি কি কাজ করলেন। সেই সংগে তিনি গুজরাতকে ভারতের অনান্য রাজ্য থেকে এগিয়েও রাখলেন।। ২৩.১১.২০১৮



1 comment: