27 September 2019

২৬শে সেপ্টেম্বর বিদ্যাসাগরের দ্বিশত জন্ম বার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি।

১৮২০ সালে মেদিনীপুর জেলার বিরসিংহ গ্রামে বাংলার এক উজ্জ্বল জ্যোতিষ্ক জণ্মগ্রহন করেন মাতা ভগবতীদেবীর কোলে। পিতার নাম ঠাকুরদাস বন্দ্যোপাধ্যায়। এই জ্যোতিষ্কের নাম ঈশ্বরচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়। ঈশ্বরচন্দ্র ছোটবেলায় খুব দুরন্ত থাকলেও তিনি ছিলেন খুব বুদ্ধিমান। গ্রামের পাঠশালায় মন দিয়ে পড়াশুনা করতেন। গুরুমশাইয়ের কাছ থেকে অল্প দিনেই সব শিখে ফেললেন এবং
উচ্চশিক্ষ্যার জন্য পিতার হাত ধরে কল কাতায় আগমন। সেই সময় রেল গাড়ি ছিল না। বিরসিংহ গ্রাম থেকে পিতা পুত্র প্রায় ১২৮ কিমি: পায়ে হেঁটে কলকাতায় রওনা দেন। পথের ধারে মেইল স্টোন দেখে ঈশ্বরচন্দ্র ইংরাজি সংখ্যাগুলি শিখে নেন।

ঈশ্বরচন্দ্র কলকাতায় সংকৃত কলেজে ভর্তি হন। কিছুদিনের মধ্যেই ঈশ্বরচন্দ্র সাহিত্য, ব্যাকরণ, সংকৃত সহ আরও কিছু বিষ য় আয়ত্ব করে ফেলেন। তাঁর পান্ডিত্য দেখে দেশের পন্ডিতগণ তাঁকে বিদ্যাসাগর উপাধিতে ভূষিত করেন। তখন তাঁর বয়স মাত্র কুড়ি।

তিনি কলকাতার ফোর্ট উইলিয়াম কলেজে চাকরিতে যোগ দেন। এই সময় থেকেই ঈশ্বরচন্দ্র সংসারের সব দায়িত্ব নিয়ে নেন।পিতা এসময় চাকরি ছেড়ে গ্রামে ফিরে যান। ঈশ্বরচন্দ্রের ইচ্ছা হয় মাকেকিছু গয়না গড়িয়ে দেবেন,ছেলের ইচ্ছের কথা শুনে মা বললেন তাঁর তিনটি  গহনা চাই। গ্রামের ছেলেদের জন্য একটা স্কুল, মেয়েদের জন্যেএকটা স্কুল আর গরিবদের জন্য একটা ডাক্তারখানা। মায়ের এই গুন ছেলের মধ্যেও দেখা গিয়ে ছিল। নিজের জন্য বিদ্যাসাগর কখনও কিছু করেন নি।দেশের জন্য করেছেন।মাতৃভক্তির জন্য বিদ্যাসাগরের নাম কিংবদন্তী হয়ে আছে।
দানশীলতার জন্য তিনি বিখ্যাত ছিলেন।তাঁকে দয়ার সাগর বলা হত। রাম মোহনের সতীদাহ প্রথা উচ্ছেদের পর বিধবা বিবাহ আইনের জন্য লড়াই করেন এবং তা  আইনবদ্ধ হয় তাঁরই প্রচেষ্টার ফলে।
১৮৪১সালে ফোর্ট উইলিয়াম কলেজে হেড পন্ডিতের পদ পান ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর। চিরদি ন তিনি গোঁড়ামি, কু সংস্কার, ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে লড়াই করে যান।স্কুল বিভাগের শিক্ষ্যার জন্য বহু গ্রন্থ বিদ্যাসাগর রচনা করেন। যেমন বোধোদয়, বর্ণ পরিচয়, কথামালা প্রভৃতি। এছাড়াও তিনি বেতাল পঞ্চবিংশতি, শকুন্তলা, সীতার বনবাস প্রভৃতি রচনা করেছিলেন বাংলা ভাষার বল সঞ্চারের জন্য।তাঁকে বাংলা গদ্যের জনক বলা হয়।
স্মপাদনা ক রেছিলেন উত্ত ররাম চ রিত,রঘুবংশ,কুমারস্মভব, কাদম্বরী, মেঘদূত, ইত্যাদি গ্রন্থ।ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরএশিয়াযটিক সোসাইটির সভ্য ছিলেন। ১৮৯১সালের ২৯শে জুলাই তিনি প র লোক গ মন করেন।ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের সম্পর্কে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের উ ক্তি ছিল "তিনি হিন্দু বা বা বাঙ্গালী ব্রাহ্মণ ছিলেন না। তাঁর প্রথম প রি চ য় তিনি ছিলেন মানুষ।তাঁর মহৎ চরিত্রের যে অক্ষয় বট তিনি বঙ্গভূমিতে রোপণ করে গেছেন, তার তলদেশ জাতির তীর্থ স্থান হয়েছে"। ড:সুকুমার সেনের কথায় "বিদ্যাসাগ রের আগে বাংলা গদ্যের চ ল ছিল, কিন্তু চাল ছিল না"।
মহাত্মা গান্ধী  ব লে ছিলেন-"আমি যে দরিদ্র বাঙ্গালী ব্রাহ্মণকে শ্রদ্ধা ক রি তিনি ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর"।

প্রিয় পাঠক–পাঠিকা ভালো লাগলে লাইক, কমেন্ট ও শেয়ার করুন। যে কোনো বিষয়ে জানা- অজানা তথ্য আমাদের সাথে আপনিও শেয়ার করতে পারেন।১০০০ শব্দের মধ্যে গুছিয়ে লিখে ছবি সহ মেল করুন  wonderlandcity.net@gmail.com ঠিকানায়। লেখা আপনার নামে প্রকাশ করা হবে।

আপনি কি এখনো  আধার প্যান কাডের সাথে লিংক করেন নি? হাতে আর মাত্র কয়েক টি দিন। ৩০শে সেপ্টেম্বেরের মধ্যে আপনাকে এই কাজ টি করে ফেলতে হবে। নচেত আপনার প্যান অকেজো হয়ে যাবে।

আপনি যদি এই মাসের মধ্যে আধারের সাথে প্যান লিঙ্ক না করেন তবে আপনার প্যান কার্ডটি অকেজো হয়ে যেতে পারে।  আপনার প্যান কার্ডকে আধার সাথে যুক্ত করার শেষ তারিখ 30 সেপ্টেম্বর আপনি যদি কোনও প্যানের সাথে লিঙ্কযুক্ত নয় এমন একটি আধার নম্বর উদ্ধৃত করে আইটিআর ফাইল করেন তবে আপনাকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে একটি নতুন প্যান কার্ড দেওয়া হবে।

আধার কার্ডের সাথে আপনার স্থায়ী অ্যাকাউন্ট নম্বর (প্যান) কার্ডের লিঙ্ক করার সময়সীমা এই মাসে শেষ হচ্ছে। এই বছরের শুরুর দিকে অর্থ মন্ত্রকের জারি করা একটি প্রজ্ঞাপন(নটিফিকেশন)অনুসারে, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৯ প্যান ও আধার দুটি আইডি কার্ডের লিঙ্ক দেওয়ার শেষ তারিখ। সরকার অতীতে বেশ কয়েকবার সময়সীমা বাড়িয়েছে এবং সংযোগ প্রক্রিয়াটি শেষ করার এটিই শেষ এবং চূড়ান্ত আহ্বান হতে পারে।
প্যানটিকে আধার সাথে লিঙ্ক না করলে কী হবে আধারটিকে প্যানের সাথে সংযুক্ত না করার পরিণতিগুলি ফিনান্স বিলে 2019 সালে স্পষ্টভাবে বর্ণিত হয়েছে। আয়কর আইনের ধারা 139AA এর উপ-ধারা (2) এর আগে বলেছিল যে প্যানটি যদি আধার সংখ্যার সাথে সংযুক্ত না হয় তবে অবৈধ হয়ে যাবে।
তবে, অর্থ বিলটি এই মাস থেকে কার্যকর করে এই বিধানটি সংশোধন করেছে। নতুন নিয়ম অনুসারে, এই জাতীয় সমস্ত প্যান কার্ডগুলি "নিষ্ক্রিয়" হয়ে যাবে। এর অর্থ এই যে এই জাতীয় প্যান কার্ডগুলি আর ব্যবহার করা হবে না সরকার হিসাবে ব্যবহৃত। পরে এগুলি আবার চালু করা যায় কিনা তা এখনও পরিষ্কার নয় কারণ আয়কর বিভাগের দ্বারা "নিষ্ক্রিয়" শব্দটি এখনও সংজ্ঞায়িত হয়নি।

আয় ক র রিযতার্ন দাখিল করার সময় যারা আধার নম্বর উদ্ধৃত করেছেন, যা কোনও প্যানের সাথে লিঙ্কযুক্ত নয়, তাদের আয়কর রিটার্ন (আইটিআর) করার সময় স্বয়ংক্রিয়ভাবে একটি নতুন প্যান কার্ড দেওয়া হবে।

প্যান কীভাবে আধার সাথে যুক্ত করবেন আপনি আয়কর বিভাগের ই-ফাইলিং ওয়েবসাইটে আপনার 12-সংখ্যার ইউআইডিএআই-জারি হওয়া আধারক নম্বরটি আপনার 10-সংখ্যার আলফানামুরিক প্যানের সাথে সহজেই সংযুক্ত করতে পারেন। আপনি পোর্টালে লিঙ্কে আধার-প্যানের স্থিতিও পরীক্ষা করতে পারেন। সমস্ত নতুন প্যান কার্ডের জন্য আপনার আধার নম্বরগুলি উদ্ধৃত করা বাধ্যতামূলক। আয়কর রিটার্ন (আইটিআর) ফাইল করার সময় আপনার প্যানটিকে আধার সাথে যুক্ত করা বাধ্যতামূলক।

পোস্টটা ভালো লেগে থাকলে অবশ্যই একটু Comment করে আপনার মূল্যবান মতামত  জানাবেন আপ নার মূল্যবান মতামত আমাদের বাড়তি অনুপ্রেরণা যোগাতে  ভীষনভাবে সাহায্য করবে | কোনো বিষয়ে জানা- অজানা তথ্য আমাদের সাথে আপনিও শেয়ার করতে পারেন।১০০০ শব্দের মধ্যে গুছিয়ে লিখে ছবি সহ মেল করুন  wonderlandcity.net@gmail.com ঠিকানায়। লেখা আপনার নামে প্রকাশ করা হবে।

10 September 2019

শিশু সাহিত্যিক সুকুমার রায়ের ৯৬ তম মৃত্যু বার্ষিকীতে আমাদের শ্রদ্ধাঞ্জলি।

সুকুমার  রায়ের পিতা উপেন্দ্রকিশোর  রায় ছিলেন একজন বিখ্যাত শিশু সাহিত্যিক। পিতার কাছ থেকে শিশু সাহিত্যি রচনার প্রেরণা সুকুমার রায় শৈশবেই পান। বাংলা সাহিত্যে সুকুমার রায় হলেন এমন একজন ব্যক্তিত্ব, যার লেখা অসাধারণ কিছু সাহিত্যকর্ম আজও বাঙালীর মনে অমর হয়ে আছে | সুকুমার রায়ের পুত্র সত্যজিৎ রায়ও একজন শিশু সাহিত্যিক। তিন পুরুষব্যাপী শিশু সাহিত্যি রচনায় বিশেষ স্থান অধিকার করে আছে কলকাতার এই রায় পরিবার। ২০১৯ সালে সুকুমার  রায়ের ৯৬ তম  মৃত্যু বার্ষিকীতে আমাদের শ্রদ্ধাঞ্জলি।

সুকুমার রায় ১৮৮৭ সালে কলকাতার  এক ব্রাহ্ম পরিবারে জন্ম জন্মগ্রহন করেন| তাঁর মা বিধুমুখী দেবী ছিলেন ব্রাহ্মসমাজের প্রধান সংস্কারক দ্বারকানাথ গঙ্গোপাধ্যায়ের মেয়ে |

সুকুমার রায় ছোটবেলা থেকেই মুখে মুখে নানা ধরণের ছড়া তৈরি করে ফেলতেন অনায়াসেই | এমনকি গান গাইতেন, নাটক করতেন আর কবিতাও লিখতে। এক কথায় যদি বলতে হয় তাহলে সেইসময় থেকেই তিনি একধরনের মজাদার গোছের মানুষ ছিলেন এবং সবাইকে নেতৃত্ব দিতে খুব ভালোবাসতেন |

তাঁর বোন পুণ্যলতা তাঁর সম্পর্কে একসময় বলেছিলেন- “দাদা যেমন আমাদের খেলাধুলা ও সব কিছুরই পাণ্ডা ছিলো, তেমনি বন্ধুবান্ধব ও সহপাঠীদের মধ্যেও সে সর্দার ছিলো । তার মধ্যে এমন কিছু বিশেষত্ব ছিল যারজন্য সবাই তাকে বেশ মানতো । এমনকি বড়রাও তার কথার বেশ মূল্য দিতো”

প্রেসিডেন্সি কলেজে পড়ার সময়ই তিনি কগড়ে তুলেছিলেন “ননসেন্স ক্লাব”। এই ক্লাবের মুখপত্র ছিল হাতে লেখাকাগজ-“সাড়ে বত্রিশ ভাজা” |
তার জনপ্রিয় সাহিত্য কর্ম আবোল তাবোল, হ-য-ব-র-ল, পাগলা দাশু, কাতুকুতু বুড়ো, হুঁকো মুখো হ্যাংলা ইত্যাদি

সাড়ে বত্রিশ ভাজার পাতাতেই  সুকুমার রায় জীবনের সর্বপ্রথম নিজের রচিত হাস্যরসযুক্ত কিছু লেখা প্রকাশ করেন | আর এই ক্লাবের জন্য তিনি দুটো নাটকও রচনা করেছিলেন, যেগুলোর নাম যথাক্রমে ছিলো “ঝালাপালা”  ও “লক্ষণের শক্তিশেল”।ক্লাবের সদ্যসের নিয়েই তিনি, এই দুটো নাটককে সবার মাঝে পরিবেশন করেন। ননসেন্স ক্লাবের প্রতিটা নাটক দেখার জন্য, সেইসময়কার প্রচুর ছেলে ও বুড়োরা ভীষন ভিড় জমাতো এবং তাদের সবারই পছন্দের নাট্যকার ছিলেন সুকুমার রায়। আবোল তাবোল (১৯২৩),পাগলা দাশু (১৯৪০)হেশোরাম হুশিয়ারের ডায়েরি, খাই-খাই (১৯৫০)। আবোল তাবোল’ পুস্তকটি প্রকাশিত হয়েছিল ১৯২৩-এর ১৯শে সেপ্টেম্বর, সুকুমারের মৃত্যুর ন’দিন পরে।

সুকুমার রায়ের মৃত্যুর ১৭ বছর পর ১৯৪০ সালে প্রথম প্রকাশিত হয় তার গল্প সংকলন ক'পাগলা দাশু'। এই গল্পগুলো সুকুমার  রায়ের সম্পাদিত পত্রিকা ' সন্দেশ'এ প্রকাশিত হত।এই সংকলনের ভূমিকা লিখেছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।

নাটক করা ছাড়াও, সন্দেশের সম্পাদক থাকাকালীন তাঁর লেখা ছড়া, গল্প ও প্রবন্ধ সবারই ভীষন পছন্দের ছিল, আজও বাংলা শিশুসাহিত্যে তাঁর রচিত সব  সাহিত্যকর্মই মাইলফলক হয়ে আছে আর ভবিষ্যতেও একই থাকবে |

তিনি রসায়ন ও পদার্থ বিজ্ঞানে অনার্সে বি,এস,সি পাশ করার পর ১৯১১ সালেমুদ্রণ শিল্পে উচ্চ শিক্ষা লাভ করতে বিলেত যান। সে সময় বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথের সহিত বিলেতে তার সাক্ষাৎ হয়। সুকুমার রায় ইস্ট অ্যাড ওয়েস্ট সোসাইটির এক অধিবেশনে 'দি স্পিরিট অব রবীন্দ্রনাথ' নামক এক প্রবন্ধ পাঠ করেন। ইংল্যান্ডের সুধী সমাজে রবীন্দ্রনাথ তখন ও পরিচিত নন। সুকুমার যখন ইংল্যান্ডে পড়াশুনা করছিলেন, সেইসময় অন্যদিকে তাঁর বাবা উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী জমি কিনে একটা  উন্নত-মানের রঙিন হাফটোন ব্লক তৈরি করেন এবং সেইসাথে নিজস্ব ছাপাখানাও স্থাপন করেন | এইসবই তিনি তৈরী করেছিলেন ছোটদের জন্য একটা মাসিক পত্রিকা “সন্দেশের”, প্রকাশনার উদ্দেশ্যেই | কিন্তু ১৯১৩ সালে ইংল্যান্ড থেকে পড়াশোনা শেষ করে সুকুমার রায় যখন কলকাতায় ফিরে আসেন, তার ঠিক অল্প কিছুদিনের মধ্যেই তাঁর বাবা উপেন্দ্রকিশোরের মৃত্যু হয়।

এরপর ইংল্যান্ড থেকে ফিরে এসে তিনি  “মনডে ক্লাব” নামে ননসেন্স ক্লাবেরই মতো একই ধরণের আরেকটা ক্লাব খুলেছিলেন | এই ক্লাবের সাপ্তাহিক সমাবেশে, সদস্যরা সব বিষয় সম্পর্কেই আলোচনা করতেন ।ছোটবেলা হতেই সাহিত্য রচনায় তাঁর প্রতিভা লক্ষ্য করা যায়। মাত্র ৯ বছর বয়স থেকেই তিনি  'মুকুল' ও 'সন্দেশ' পত্রিকায়  নিয়মিত ভাবে লিখতেন। বাবার মৃত্যুর পর একজন দায়িত্ববান ছেলে হিসাবে এরপর তিনিই সন্দেশ পত্রিকার সম্পাদনার দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নেন এবং সেই পত্রিকাতেই নিজের অভূতপূর্ব সাহিত্যকর্ম গুলো একে একে প্রকাশ করতে থাকেন | বাবার মৃত্যুর পর আট বছর ধরে তিনি এই সন্দেশ পত্রিকার ও পারিবারিক ছাপাখানা পরিচালনার দায়িত্ব পালন করেন | তারপর সেইসবের দায়িত্ব তিনি আসতে আসতে তাঁর ছোটভাইকেই সম্পূর্ণরূপে দিয়ে দেন। বিয়ের ঠিক ৮ বছর পর অর্থ্যাৎ ১৯২১ সালের ২রা মে তারিখে সুপ্রভা দেবী তাঁর একমাত্র পুত্রসন্তানের জন্ম দেন | যার নাম দেওয়া হয়েছিল সত্যজিৎ।

সত্যজিৎ রায় জন্মগ্রহণ করার কিছু মাস পর থেকেই সুকুমার রায়ের শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়া শুরু হয়। পরে চিকিৎসা শুরু করার পর জানা যায়, তিনি কালাজ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন এবংসেই সময় সেটাকে ঠিক করা একদম অসম্ভব | কারণ তখন সেইযুগে কালাজ্বরের উপযুক্ত চিকিৎসা পদ্ধতি ও ওষুধের আবিষ্কার হয়ে ওঠেনি |

কিন্তু মৃত্যু প্রায় নিশ্চিত জেনেও তিনি শেষসময়ে অসাধারণ মানসিক স্থৈর্যের পরিচয় দিয়েছিলেন | কারণ এত বড় একটা রোগে আক্রান্ত হওয়ার পরও তিনি নিজের কাজকে একটা দিনের জন্যও বন্ধ করেননি বরং আরো উদ্যমের সাথে সেটাকে করে গেছিলেন |

এই সম্পর্কে অবশ্য জানা যায়, সত্যজিৎ রায়ের একটা লেখায় | যেখানে তিনি তাঁর বাবার শেষের দিনগুলো সম্পর্কে লিখেছিলেন এই কথাগুলো:

“রুগ্ন অবস্থাতেও বাবার কাজের পরিমাণ ও উৎকর্ষ দেখলে অবাক হতাম । শুধু লেখা বা আঁকার কাজেই নয়, ছাপার কাজেও যে তিনি অসুখের মধ্যে অনেক চিন্তা ব্যয় করেছেন তারও প্রমাণ রয়েছে। একটি নোটবুকে তাঁর আবিষ্কৃত কয়েকটা মুদ্রণ পদ্ধতির তালিকা রয়েছে । এইগুলো পেটেন্ট নেবার পরিকল্পনা তাঁর মনে ছিলো, কিন্তু কাজে হয়ে ওঠেনি@@@@

এই সত্যজিৎ রায় পরবর্তীকালে বাংলা তথা ভারতীয় সিনেমা জগতের এক উজ্জ্বল জ্যোতিষ্ক হয়ে ওঠেন, যা আমরা  প্রত্যেকেই জানি।

১৯২৩ সালের ১০ই সেপ্টেম্বর,কালাজ্বরে ১০০নং গড়পার রোডের বাড়িতে মাত্র ৩৬ বছর বয়সে সাহিত্যিক সুকুমার রায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

পোস্টটা ভালো লেগে থাকলে অবশ্যই একটু Comment করে আপনার মূল্যবান মতামত  জানাবেন আপ নার মূল্যবান মতামত আমাদের বাড়তি অনুপ্রেরণা যোগাতে  ভীষনভাবে সাহায্য করবে | কোনো বিষয়ে জানা- অজানা তথ্য আমাদের সাথে আপনিও শেয়ার করতে পারেন।১০০০ শব্দের মধ্যে গুছিয়ে লিখে ছবি সহ মেল করুন  wonderlandcity.net@gmail.com ঠিকানায়। লেখা আপনার নামে প্রকাশ করা হবে।


05 September 2019

ড: স র্বপ ল্লী রাধাকৃষ্ণণের ১৩১তম জন্ম বার্ষিকীতে আমাদের শ্রদ্ধাঞ্জলি

ড: সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণণ মাদ্রাজে তিরুতানি শহরে  তেলেগু ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহন করেন। পরিবারে অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতা ছিল না। তিরুতানি শহরেই তাঁর প্রাথমিক শিক্ষা সম্পূর্ণ হয়। তিনি বেলোন কলেজে চার বছর পড়াশুনা করেন।১৯০৪ থেকে ১৯০৮ সাল পর্যন্ত রাধাকৃষ্ণণ মাদ্রাজ ক্রিশ্চান কলেজে পড়াশুনা করে বি, এ পরীক্ষায় প্রথম স্থান অধিকার করেন।তাঁকে ড: স্যামুয়েল স্বর্ণপদকে ভূষিত করা হয়।

রাধাকৃষ্ণণ পৃথিবির বিভিন্ন দেশে ভাষণ দিয়ে বহু  কৃতিত্ব অর্জন করেন। ১৯৫৫ সালে তাঁর 'ডিসকভারি অব ফেথ' গ্রন্থটি প্রকাশিত হয়।পরের বছর 'ইস্ট অ্যান্ড ওয়েস্ট' প্রকাশ পায়। ১৯৬২ সালে তিনি ভারতের দ্বিতীয় রাষ্ট্রপতির পদ গ্রহন করেন।
মাদ্রাজ বিশ্ববিদ্যালয়ে এম,এ পরীক্ষাতে একটি মৌলিক প্রবন্ধ রচনা করতে হত। রাধাকৃষ্ণণ ওই সময় 'এথিকস্ অব দ্য বেদান্ত' নামে একটি অসাধরণ মৌলিক প্রবন্ধ রচনা করলেন। তখন তাঁর বয়স মাত্র কুড়ি। ১৯১৯ সালে রাধাকৃষ্ণণ 'লরিয়েট ইন টিচিং' উপাধি লাভ করেন। এ সময় তিনি মাদ্রাজের প্রেসিডেন্সি কলেজে অধ্যাপকরূপে শিক্ষক বৃত্তি গ্রহন করেন।

দার্শনিক ও শিক্ষক এবং ডাঃ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণনের জন্মবার্ষিকী এবং শিক্ষার ক্ষেত্রে তাঁর মনমুগ্ধকর অবদানের জন্য প্রতি বছর ৫ সেপ্টেম্বর শিক্ষক দিবস পালন করা হয়। তিনি ১৮৮৮ সালের ৫ সেপ্টেম্বর জন্মগ্রহণ করেছিলেন।
ডাঃ রাধাকৃষ্ণানের মতে  শিক্ষকরা আমাদের সমাজের স্তম্ভ, তারা আমাদের বাচ্চাদের জীবনে জ্ঞান, শক্তি দিয়ে সজ্জিত করতে এবং জীবনের বিভিন্ন সমস্যার মুখোমুখি হতে শিখিয়ে তুলতে এক অসাধারণ ভূমিকা পালন করে। তারা তাদের শিক্ষার্থীদের দেশের দায়িত্বশীল নাগরিক হতে শেখায়। ভারত সর্বকালের মহান শিক্ষকদের দ্বারা জ্ঞান বিতরণের জন্য স্বর্গ হিসাবে বিবেচিত হত। তদুপরি, তিনি চেয়েছিলেন যে শিক্ষার মান উন্নত করা উচিত এবং শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং তারা যেভাবে পড়িয়েছিলেন তার মধ্যে একটি দৃঢ় সম্পর্ক গড়ে তোলা উচিত। সব মিলিয়ে তিনি শিক্ষাব্যবস্থা পরিবর্তন করতে চান। তাঁর মতে শিক্ষকের উচিত ছাত্রদের স্নেহ লাভ করা এবং শিক্ষকদের  ছাত্রদের শ্রদ্ধা অর্জন করা উচিত।

আপনি কি জানেন শিক্ষক দিবসের উদ্ভব হ ল কীভাবে ? ডাঃ রাধাকৃষ্ণনের জন্মদিনের শুভ উপলক্ষে তাঁর ছাত্র-বান্ধবীরা তাঁকে তাঁর জন্মদিন উদযাপনের অনুমতি দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছিলেন তবে জবাবে ডঃ রাধাকৃষ্ণান বলেছিলেন যে, “আমার জন্মদিন আলাদাভাবে পালনের পরিবর্তে,  সেপ্টেম্বরেই শিক্ষক দিবস হিসাবে পালন করা ভালো হবে। ১৯৬২সাল থেকে, ভারত ৫ইসেপ্টেম্বর শিক্ষক দিবস পালন করে আসছে। দিনটি দার্শনিক ও শিক্ষক ডাঃ সর্বপল্লী রাধখৃষ্ণনের জন্মদিন এবং শিক্ষার ক্ষেত্রে তাঁর মননশীল অবদানের স্মরণে। ১৯৭৫ সালের ১৬ই এপ্রিল তাঁর মহা প্রয়াণ ঘটে।

প্রিয় পাঠক–পাঠিকা ভালো লাগলে লাইক, কমেন্ট ও শেয়ার করুন। যে কোনো বিষয়ে জানা- অজানা তথ্য আমাদের সাথে আপনিও শেয়ার করতে পারেন।১০০০ শব্দের মধ্যে গুছিয়ে লিখে ছবি সহ মেল করুন  wonderlandcity.net@gmail.com ঠিকানায়। লেখা আপনার নামে প্রকাশ করা হবে।