27 September 2019

২৬শে সেপ্টেম্বর বিদ্যাসাগরের দ্বিশত জন্ম বার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি।

১৮২০ সালে মেদিনীপুর জেলার বিরসিংহ গ্রামে বাংলার এক উজ্জ্বল জ্যোতিষ্ক জণ্মগ্রহন করেন মাতা ভগবতীদেবীর কোলে। পিতার নাম ঠাকুরদাস বন্দ্যোপাধ্যায়। এই জ্যোতিষ্কের নাম ঈশ্বরচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়। ঈশ্বরচন্দ্র ছোটবেলায় খুব দুরন্ত থাকলেও তিনি ছিলেন খুব বুদ্ধিমান। গ্রামের পাঠশালায় মন দিয়ে পড়াশুনা করতেন। গুরুমশাইয়ের কাছ থেকে অল্প দিনেই সব শিখে ফেললেন এবং
উচ্চশিক্ষ্যার জন্য পিতার হাত ধরে কল কাতায় আগমন। সেই সময় রেল গাড়ি ছিল না। বিরসিংহ গ্রাম থেকে পিতা পুত্র প্রায় ১২৮ কিমি: পায়ে হেঁটে কলকাতায় রওনা দেন। পথের ধারে মেইল স্টোন দেখে ঈশ্বরচন্দ্র ইংরাজি সংখ্যাগুলি শিখে নেন।

ঈশ্বরচন্দ্র কলকাতায় সংকৃত কলেজে ভর্তি হন। কিছুদিনের মধ্যেই ঈশ্বরচন্দ্র সাহিত্য, ব্যাকরণ, সংকৃত সহ আরও কিছু বিষ য় আয়ত্ব করে ফেলেন। তাঁর পান্ডিত্য দেখে দেশের পন্ডিতগণ তাঁকে বিদ্যাসাগর উপাধিতে ভূষিত করেন। তখন তাঁর বয়স মাত্র কুড়ি।

তিনি কলকাতার ফোর্ট উইলিয়াম কলেজে চাকরিতে যোগ দেন। এই সময় থেকেই ঈশ্বরচন্দ্র সংসারের সব দায়িত্ব নিয়ে নেন।পিতা এসময় চাকরি ছেড়ে গ্রামে ফিরে যান। ঈশ্বরচন্দ্রের ইচ্ছা হয় মাকেকিছু গয়না গড়িয়ে দেবেন,ছেলের ইচ্ছের কথা শুনে মা বললেন তাঁর তিনটি  গহনা চাই। গ্রামের ছেলেদের জন্য একটা স্কুল, মেয়েদের জন্যেএকটা স্কুল আর গরিবদের জন্য একটা ডাক্তারখানা। মায়ের এই গুন ছেলের মধ্যেও দেখা গিয়ে ছিল। নিজের জন্য বিদ্যাসাগর কখনও কিছু করেন নি।দেশের জন্য করেছেন।মাতৃভক্তির জন্য বিদ্যাসাগরের নাম কিংবদন্তী হয়ে আছে।
দানশীলতার জন্য তিনি বিখ্যাত ছিলেন।তাঁকে দয়ার সাগর বলা হত। রাম মোহনের সতীদাহ প্রথা উচ্ছেদের পর বিধবা বিবাহ আইনের জন্য লড়াই করেন এবং তা  আইনবদ্ধ হয় তাঁরই প্রচেষ্টার ফলে।
১৮৪১সালে ফোর্ট উইলিয়াম কলেজে হেড পন্ডিতের পদ পান ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর। চিরদি ন তিনি গোঁড়ামি, কু সংস্কার, ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে লড়াই করে যান।স্কুল বিভাগের শিক্ষ্যার জন্য বহু গ্রন্থ বিদ্যাসাগর রচনা করেন। যেমন বোধোদয়, বর্ণ পরিচয়, কথামালা প্রভৃতি। এছাড়াও তিনি বেতাল পঞ্চবিংশতি, শকুন্তলা, সীতার বনবাস প্রভৃতি রচনা করেছিলেন বাংলা ভাষার বল সঞ্চারের জন্য।তাঁকে বাংলা গদ্যের জনক বলা হয়।
স্মপাদনা ক রেছিলেন উত্ত ররাম চ রিত,রঘুবংশ,কুমারস্মভব, কাদম্বরী, মেঘদূত, ইত্যাদি গ্রন্থ।ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরএশিয়াযটিক সোসাইটির সভ্য ছিলেন। ১৮৯১সালের ২৯শে জুলাই তিনি প র লোক গ মন করেন।ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের সম্পর্কে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের উ ক্তি ছিল "তিনি হিন্দু বা বা বাঙ্গালী ব্রাহ্মণ ছিলেন না। তাঁর প্রথম প রি চ য় তিনি ছিলেন মানুষ।তাঁর মহৎ চরিত্রের যে অক্ষয় বট তিনি বঙ্গভূমিতে রোপণ করে গেছেন, তার তলদেশ জাতির তীর্থ স্থান হয়েছে"। ড:সুকুমার সেনের কথায় "বিদ্যাসাগ রের আগে বাংলা গদ্যের চ ল ছিল, কিন্তু চাল ছিল না"।
মহাত্মা গান্ধী  ব লে ছিলেন-"আমি যে দরিদ্র বাঙ্গালী ব্রাহ্মণকে শ্রদ্ধা ক রি তিনি ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর"।

প্রিয় পাঠক–পাঠিকা ভালো লাগলে লাইক, কমেন্ট ও শেয়ার করুন। যে কোনো বিষয়ে জানা- অজানা তথ্য আমাদের সাথে আপনিও শেয়ার করতে পারেন।১০০০ শব্দের মধ্যে গুছিয়ে লিখে ছবি সহ মেল করুন  wonderlandcity.net@gmail.com ঠিকানায়। লেখা আপনার নামে প্রকাশ করা হবে।

No comments:

Post a Comment