26 November 2018

জগদীশ চন্দ্র বসু কেন বিনা বেতনে প্রেসিডেন্সি কলেজে ছাত্র পড়িয়ে ছিলেন-

ছোটবেলায় গাছপালা দেখলেই পাতা ছেঁড়া,ডালপালা ভাঙ্গা প্রায় আমার অভ্যাসে পরিণত হয়েছিল। কিন্তু হঠাৎ আর পারলাম না,কারণ স্কুলের শিক্ষিক একদিন বললেন যে,আমাদের যেমন হাত কাটা গেলে আমরা ব্যাথা পাই তেমনি গাছেরাও একই অনুভূতিতে সাড়া দেয়। কথাগুলো শোনার পর থেকে নিজের এই বদঅভ্যাস থেকে সরে তো আসলামই,অন্যদেরও দেখলে বকা দিতাম। স্যার জগদীশ চন্দ্র বসু, হ্যাঁ, তিনিই বিশ্ববাসীকে প্রথমবারের মত জানিয়েছিলেন উদ্ভিদের মধ্যে আছে প্রানশক্তি। এটি প্রমাণের জন্যে তিনি ‘ক্রেস্কোগ্রাফ’ নামক একটি যন্ত্র আবিষ্কার করেন,যা উদ্ভিদদেহের সামান্য সাড়াকে লক্ষগুণ বৃদ্ধি করণ প্রদর্শণ করে। ব্রিটিশশাসিত ভারতীয় উপমহাদেশে বিভিন্ন আশ্চর্যজনক যন্ত্র আবিষ্কার করে বিশ্বে হইচই ফেলে দেন এই বাঙালি বিজ্ঞানী। তিনি ১৮৫৮ সালে ৩০ নভেম্বর ময়মনসিংহ শহরে জন্ম নেন। ১১ বছর বয়সে ১৮৬৯ সালে জগদীশ চন্দ্র বসু কলকাতার সেন্ট জেভিয়ার্স স্কুলে ভর্তি হন।১৮৮০ সালে ডাক্তারি পড়ার জন্য জগদীশ চন্দ্র বসুকে বিদেশে পাঠান তার বাবা।
১৮৮৫ সালে তিনি লেখাপড়া শেষে ভারতে ফিরে আসেন। সেই সময়ে লর্ড রিপনের অনুরোধে তিনি প্রেসিডেন্সি কলেজে পদার্থবিজ্ঞানের ভারপ্রাপ্ত অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন। চাকরিতে ঢুকেই তিনি কলেজের অন্যান্য শিক্ষকদের মধ্যে তীব্র সাম্প্রদায়িকতা অনুভব করেন। কারণ ব্রিটিশ অধ্যাপকেরা যে বেতন পেত সেই তুলনায় তাঁর বেতন ছিলো বেশ নগণ্য। এই ব্যবস্থা তিনি মেনে নিতে পারেন নি। তাই প্রতিবাদ স্বরূপ তিনি প্রায় তিন বছর কোনো বেতন গ্রহণ করেন নি, কিন্তু অধ্যাপকের কাজ থেকেও বিচ্যুত হননি। এই তিন বছর তিনি শিক্ষার্থীদের পড়িয়ে গিয়েছেন বেতন ছাড়াই। পরে পাব্লিক ইন্সট্রাকশন ও প্রেসিডেন্সি কলেজের অধ্যক্ষের চেষ্টায় তাঁকে স্থায়ীভাবে অধ্যাপক হিসেবে নিয়ে নেয়া হয় এবং তাঁর তিন বছরের পুরো বেতন দিয়ে দেয়া হয়। 
আগামী শুত্রুবার ৩০শে নভেম্বর, ২০১৮ তার ১৬০তম জন্মবার্ষিকী। 

No comments:

Post a Comment