15 August 2019

অগ্নিযুগের বিপ্লবী নেতা ও দার্শনিক শ্রী অরবিন্দ ঘোষের ১৪৭ তম জন্ম বার্ষিকীতে আমাদের শ্রদ্ধাঞ্জলি।


অগ্নিযুগের বিপ্লবী নেতা ও দার্শনিক শ্রী অরবিন্দ ঘোষের ১৪৭ তম জন্ম বার্ষিকীতে আমাদের শ্রদ্ধাঞ্জলি। বাবা  কৃষ্ণধন ছিলেন বাঙালি দের মধ্যে প্রথম বিলেত ফেরত চিকিৎসক।আচার ব্যবহার চাল চলনে কৃষ্ণধন ছিলেন পুরোদস্তর সাহেব। শ্রী অরবিনন্দের মা স্বর্ণলতা ছিলেন অত্যন্ত স্নেহময়ী। ভাই বোন মিলে
অরবিন্দরা মোট  পাঁচজন  ছিলেন।
বাড়িতে বিলেতি পরিবেশে বড় হচ্ছিলেন।
অরবিন্দের জন্ম হয়ে ছিল কলকাতার থিয়েটার রোডে ১৫ই আগস্ট ১৮৭২ সালে। ঘোষ পরিবারের বাড়ি যেন ইংরেজ পরিবার। শ্রীঅরবিনন্দের দেখাশোনার দায়িত্ব ছিল একজন ইংরেজ আয়ার হাতে। ছোট থেকে পাঁচ বছর পর্যন্ত অরবিন্দ জানতেই পারেননি যে তাঁর মাতৃভাষা বাংলা।শ্রীঅরবিন্দের বয়স যখন পাঁচ তখন তিনি দার্জিলিংয়ে সাহেব দের স্কুলে ভর্তি হন।
শ্রীঅরবিন্দের বয়স যখন সাত তখন তিনি ও  তাঁরভাই ইংল্যান্ডে পড়তে যান। শ্রী অরবিন্দ  কেম্ব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএ পাশ করে দেশে ফিরে আসেন।ইংল্যান্ডে থাকার সময় তিনি জার্মান, ইতালিয়,স্পানিশ এবং গ্রীক ভাষা শিখেছিলেন।
লন্ডনে থাকাকালিন সে সময়কার বরোদার মহারাজা তাঁর রাজ্যের শিক্ষা বিভাগে ভালো বেতনে কাজ করার জন্য আহ্বান জানান। ১৮৯৩  সালে বিদেশে শিক্ষ্যিত হয়ে দেশ মাতৃকার সেবায় জীবন উৎসর্গ করতে শ্রীঅরবিন্দ দেশে ফিরে বরোদায় চলে আসেন।বারোদায় অরবিন্দ ভারতীয় সংস্কৃতির উপর গভীর অধ্যয়ন শুরু করেন, নিজ ঊদ্যোগে সংস্কৃত, হিন্দি এবং বাংলা, বিলেতের শিক্ষায় যেসব থেকে তাকে বঞ্চিত করা হয়েছিল।এই সময় তিনি সংস্কৃত হিন্দি ও বাংলা ভাষা শিক্ষা শুরু করেন। এরপর তিনি   অল্প টাকার বেতনে জাতীয় শিক্ষা পরিষদে অধ্যাপকের চাকরি নেন।তিনি বারোদা থেকেই তার প্রথম কাব্য সঙ্কলন "The Rishi" প্রকাশ করেন। একই সময়ে তিনি বৃটিশ বিরোধী সক্রিয় রাজনীতিতে আগ্রহী হয়ে ওঠেন।বাংলা ও মধ্য প্রদেশে ভ্রমন করে বিপ্লবী দলগুলোর সাথে সংযোগ স্থাপন করেন। লোকমান্য তিলক এবং ভইগ নি নিবেদিতার সাথেও যোগাযোগ স্থাপিত হয়।
১৯০৯ সালে যখন বঙ্গভঙ্গের বিরুদ্ধে সারা দেশ উত্তাল,সেই সময় তিনি বন্দেমাতরম  নামক একটি ইংরাজি পত্রিকা  সম্পাদনা করতেন। এই পত্রিকায় বঙ্গভঙ্গের বিরুদ্ধে লিখে তিনি পরিচিত হয়ে পড়েন। এমন সময় অনুজ বিপ্লবী বারীন ঘোষের মাধ্যমে বাংলার বিপ্লবী দলের সাথে তাঁর যোগাযোগ ঘটে।বারীন ঘোষ কে তিনি  চিঠি লিখে নির্দেশ দেন ছেলেদের মধ্যে শৃঙ্খলা  এনে ছোট ছোট দল গঠন করতে।কোন শহরই বাদ গেল না।এই ভাবে একে একে মুরারী পুকুরের ছেলেরা এক ত্রিত হয়ে দেশের কাজে একনিষ্ঠ সেবক হব, প্রাণ পণ করে। তাদের সকলের মুখেই  মাতৃমন্ত্র বন্দেমাতরম।

স্বাধীনতার বাণী ছড়িয়ে দেবার জন্য এই সময় বন্ন্দেমাতরম নামে একটা ইংরাজী প ত্রিকা সম্পাদনাক  করতেন। ইংরেজ সরকার এই পত্রিকার এবং আলিপুর বোমার মামলার কারণে শ্রীঅরবিন্দকে গ্রেপ্তার  করেন। কিন্তু দুটি ক্ষেত্রেই অরবিন্দ  মুক্তি পান।এর আল্প কিছুদিন পর অরবিন্দ জানতে পারেন যে ইংরেজ সরকার তাঁকে বরাবরের জন্য বন্দী রাখার ব্যবস্থা করছেন।তখন ১৯১০ সালে তিনি বাংলা ছেড়ে প্রথমে চন্দনগর ও  পরে ফরাসি উপনিবেশ পন্ডিচেরিতে চলে যান।যে শ্রীঅরবিন্দ সুপ্ত ও মোহগ্রস্ত ভারতের তরু ন দের বুকে প্রেরণা জাগিয়ে দেশপ্রেমের বন্যা বইয়ে দেন তিনি আবার যোগ সাধনার মাধ্যমে মুক্তি পথের নিশানা তুলে ধরেন।
১৯১৪ সালে মীরা রিচার্ড নামে রক বিপ্লবী ফরাসী মহিলা শ্রী অরবিন্দের আশ্রমে আসেন এবং অরবিন্দের কাছে দীক্ষা নিলে পর তাঁর নাম হ য় শ্রীমা।তাঁরই ওপর আশ্রম পরিচালনার ভার পড়ত।আওরবিন্দ প ন্ডিচেরীতে থাকাকালীন যে সব গ্রন্থ রচনা করেন তার মধ্যে The Motherএবং ছয় খন্ডে সমাপ্ত দিব্য জীবন The Life Divine উল্লেখযোগ্য।
শ্রী অরবিন্দ ঘোষ পরবর্তী জীবনে আধ্যাত্মিক সাধনায় সিদ্ধিলাভ করে হয়েছিলেন ঋষিঅরবিন্দ।
ঋষি অরবিন্দ ১৯৫০সালের৪ঠা ডিসেম্বর  পরলোকগমন করেন।

No comments:

Post a Comment