10 October 2019

স্বাধীনতা সংগ্রামী ও  বৈজ্ঞানিক ড: মেঘনাথ সাহার ১২৬ তম জন্মবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি।

ছাত্রাবস্থায় পূর্ববঙ্গ -এর ছোট লাট স্যার বমফিল্ড ফুলার স্কুল পরিদর্শনে গেলে তাঁরই নেতৃত্বে ছাত্ররা বিদ্যালয় ত্যাগ করে প্রতিবাদ জানায়। এটা বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলন সারা বাংলায় যখন চলছিল তখনকার ঘটনা। ছাত্র জীবন হতেই এভাবে তাঁর রাজনীতির প্রতি আকর্ষণ লক্ষ্য করা যায়। বিপ্লবীদের সঙ্গে  তিনি যোগাযোগ রাখতেন। ১৯১৪ সালের বন্যাত্রাণের কাজে তাঁর গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা ছিল। ১৯২৩ সালে আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায়ের রিলিফ কমিটিতে থেকে তিনি জনহিতকর কাজে অংশ গ্রহণ করেন।দেশ ভাগ হলে উদ্বাস্তুদের পুনর্বাসন  ও অন্যান্য সমস্যা নিয়ে তিনি আন্দোলন  করেন।তিনি লোক সভার সদস্য হন। সে সময় বিরোধীপক্ষের নেতা নির্বাচিত  হয়ে ছিলেন।

ড: মেঘ্ নাথ সাহা ১৮৯৩ সালের ৬ ই অক্টোবর  ঢাকা জেলার অন্তর্গত সেওড়াতলী নামে একটি অখ্যাত গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা জগন্নাথ সাহার আর্থিক অবস্থা ভাল ছিল না। ড: মেঘনাথ সাহা ৫ বছর বয়সে ৫ মাইল দূরের প্রাথমিক স্কুলে পড়াশুনা শুরু করেন।পরে ঢাকা কলেজিয়েট স্কুলে ভর্তি হন। ঢাকা কলেজ হতে আই. এস. সি. পাশ করেন। পরে কলকা তা বিশ্ববিদ্যালয় হতে এম. এস. সি. তে কৃতিত্বের সাথে উত্তীর্ণ হন। ১৮১৮ সালে বিজ্ঞান কলেজের লেকচারার হন। সে বছরেই কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় হতে ডি.এস.-সি. হন।

১৯২০সালে থিওরি অব থারমাল আইওনাইজেশন তত্বের প্রবক্তা এই গর্বেষনা মেঘনাথ সাহাকে বিখ্যাত করে তোলে। উচ্চতর গর্বেষণার জন্য তিনি লন্ডনে যান। পরে যান বার্লিনে। দীর্ঘ ৬ বছর গর্বেষণার পর দেশে ফেরেন এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালের খয়রা অধ্যাপক হন।

১৯২৩ সালে তিনি এলাহাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দেন। দীর্ঘ ১৫ বছর এলাহাবাদেই থাকেন। সূর্যের বর্ণালি তিনি বিশ্লেষণ করেন। এই বিশ্লেষণে তিনি দেখান যে সূর্যদেহে পৃথিবির সব বস্তুগুলোই বর্তমান। সূর্যের প্রতি ১০০ ভাগের মধ্যে হাইড্রোজেন ৮১.৭.বাকি১৮.১৭ হিলিয়াম.. ০৭কার্বন, নাইট্রোজেন,অক্সিজেন। লৌহ, নিকেল, দস্তা,সিসা, সোডিয়াম, ক্যালসিয়াম, সুলু কন, প্রভৃতি পার্থিব উপাদানের গ্যাস। এছাড়া সূর্যের বিকিরন কে বিশ্লেষণ করে পৃথিবীর রহস্য নির্ধারণ  করেন। জ্যোতিবিজ্ঞানে তাঁর এই আবিষ্কার নিউটনের ১০টিসেরা আবিষ্কারের পরই স্থান পেয়েছে।আয়নমন্ডল ও বেতার তরঙ্গ নিয়েও তিনি গর্বেষণা চালান।

তিনি বহু সংগঠনের সাথে যুক্ত ছিলেন, বহু সম্মানও লাভ করেন এবং তিনি বিভিন্ন দেশের বিজ্ঞানের সন্মেলনও আলোচনা চক্রে যোগ দিয়েছেন।১৯২৫ সালে ভারতের বিজ্ঞান কংগ্রেসের পদার্থ বিদ্যার তিনি মূল সভাপ তি হন। তাঁর প্রচেষ্টায় ১৯৩১ সালে এলাহাবাদ বিজ্ঞান পরিষদ গঠিত হয়।
১৯৫৬সালের ১৬ই ফেব্রুয়ারি তাঁর মৃত্যু হয়।তাঁর সন্মানার্থে তাঁরই প্রতিষ্ঠিত ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব সায়েন্সের নাম 'সাহা ইন্সটিটিউট অব নিউক্লিয়ার ফিজিক্স' হয়।
লাইক, কমেন্ট ও শেয়ার করুন। যে কোনো বিষয়ে জানা- অজানা তথ্য আমাদের সাথে আপনিও শেয়ার করতে পারেন।১০০০ শব্দের মধ্যে গুছিয়ে লিখে ছবি সহ মেল করুন  wonderlandcity.net@gmail.com ঠিকানায়। লেখা আপনার নামে প্রকাশ করা হবে।

No comments:

Post a Comment