11 August 2021

১১ই আগষ্ট ক্ষুদিরাম বসুর ১১৩ তম প্রয়াণ দিবসে আমাদের শ্রদ্ধাঞ্জলি।

 

ক্ষুদিরাম বসু






শহিদ ক্ষুদিরামের মৃত্যুর পর বাংলায় যে গান 'এক বার বিদায় দে মা ঘুরে আসি' রচিত হয়ে ছিল সেই গান আজও পুরানো হয়নি। বাংলার পথে প্রান্তরে ওই গানের সুর আজও আমাদের বিপ্লবী ক্ষুদিরাম বসুর কথা স্মরণ করিয়ে দেয়।  ফাঁসির মঞ্চে গেয়ে গেল যারা জীবনের জয়গান তাদের মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত সদ্য তরুণ ক্ষুদিরাম বসু। ১৯০৮ সালের ১১ই আগষ্ট মজফ্ফরপুরে সকালে ক্ষুদিরামের  ফাঁসি হয়।

বাংলার স্বাধীনতা সংগ্রামের দ্বিতীয়  শহিদ হলেন ক্ষুদিরাম বসু। বিংশ শতাব্দীর প্রথমদিকে দেশকে মুক্ত করার  জন্য যত আন্দোলন  হয়েছে তাতে মেদিনীপুরের নাম পুরোভাগে। এই মেদিনীপুর জেলার হবিবপুরে তাঁর ১৮৮৯ সালের ৩রা ডিসেম্বর  জন্ম হয়।

ক্ষুদিরামের পূর্বে তাঁর দুটি ভাই মারা যায়। তাই সেকালের প্রথা অনুসারে তাঁর জ্যেষ্ঠা  ভগিনী অপরূপা দেবীর কাছে মুষ্ঠি ক্ষুদের বিনিময়ে  ক্ষুদিরাম কে বিক্রয় করা হয়। এই জন্যই তাঁর নাম হয় ক্ষুদিরাম।

শৈশবে ক্ষুদিরাম ছিলেন অত্যন্ত দুরন্ত। পড়াশুনার থেকে খেলাধুলোয় অগ্রহ বেশি ছিল মেদিনীপুর কলেজিয়েট স্কুলে যখন  অষ্টম শ্রেণিতে উঠেন তখন  বৈপ্লবিক অন্দোলনে সারা বাংলা  চঞ্চল হয়ে ওঠে।  মেদিনীপুরও জেগে ওঠে। ক্ষুদিরাম বিদ্যালয়ছেড়ে মত্ত হলেন সেই আন্দোলনে।

সে সময় মেদিনীপুরের গুপ্ত সমিতির নায়ক ছিলেন সত্যেন্দ্রনাথ বসু। স্বদেশি অন্দোলন উপলক্ষে ১৯০৫ সালে মেদিনীপুরে সর্বপ্রথম ১০ হাজার লোকের যে মিছিল হয় তার অগ্রভাগে ছিলেন ক্ষুদিরাম। এসময় সমস্ত সভা সমিতিতে ক্ষুদিরাম যোগ দিতেন। ১৯০৬ সালে মেদিনীপুরের কৃষিপ্রদর্শনীতে সত্যেন্দ্রনাথ রচিত 'সোনার বাংলা' নামক প্রচার পত্র বিলি করে ক্ষুদিরাম গ্রেপ্তার হন। সত্যেন্দ্রনাথ অবশ্য মিথ্যা পরিচয় দিয়ে ক্ষুদিরাকে মুক্ত করেন।১৯০৮ সালে এপ্রিল  মাসে কলকাতার বৈপ্লবীচক্রে মজফ্ফরপুরে কিংসফোর্ডকে হত্যার পরিকল্পনা গৃহিত হয়। বিভিন্ন  হত্যাকার্যে অংশগ্রহনকারী প্রফুল্ল চাকীর সহযোগী হিসেবে মেদিনীপুর গুপ্ত সমিতি ক্ষুদিরামকে নির্বাচিত করে।

৩০ শে এপ্রিল  তাঁরা কিংসফোর্ডের গাড়িতে বোমা ছুড়লে মি.কেনেডি ও তার পত্নী নিহত হন। ওই গাড়িতে কিংসফোর্ড ছিল না।

ঘটনার পর দুজন পরস্পরের বিপরীত দিকে যাত্রা করেন। ১লা মে ক্ষুদিরাম  উইনী ষ্টেশনের কাছে পুলিশের হাতে ধরা পরেন।বিচারে ক্ষুদিরামের প্রাণদন্ডের আদেশ হয়।

হাইকোর্টে আপিল করা হলেও মৃত্যুদন্ডাদেশ বহাল থাকে। ওই বছর ১১ই অগষ্ট মজফ্ফরপুরে সকাল ছয়টায় ক্ষুদিরামের ফাঁসি হয়। প্রফুল্ল চিত্তে ও দৃঢ় পদক্ষেপে ফাঁসির মঞ্চের দিকে অগ্রসর হন ক্ষুদিরাম। মাত্র ১৯ বছরের কিশোর ছিলেন এরূপ কঠিন ধাতুতে গড়া।

No comments:

Post a Comment