04 August 2021

ঋষি অরবিন্দের ১৪৯ তম জন্ম বার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি

ঋষি অরবিন্দ

ঋষি অরবিন্দের ১৪৯ তম জন্ম বার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি 

অরবিন্দ ঘোষ ১৮৭২ সালের ১৫ই আগষ্ট কলকাতার থিয়েটার রোডের এক  সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা কৃষ্ণধন ছিলেন বাঙালিদের মধ্যে প্রথম বিলেত ফেরত চিকিৎসক। মাতা স্বর্ণলতা ছিলেন কলকাতার প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব রাজনারায়ণ বসুর জ্যেষ্ঠা কন্যা। অরবিন্দের  পিতা পাশ্চাত্য শিক্ষা- দীক্ষা রীতি- নীতির অত্যন্ত ভক্ত ছিলেন।  অরবিন্দের বয়স যখন ৫ বছর তখন অরবিন্দ দার্জিলিংয়ে সাহেবদের লরেটো কনভেন্ট স্কুলে ভর্তি হন।অত্যন্ত শান্ত, মিতভাষী স্বভাবের ছিলেন বলেই অরবিন্দ শিক্ষকদের প্রিয় পাত্র হয়ে উঠেন। তাঁর ইংরাজি উচ্চারণ খুব শুদ্ধ ছিল। মাত্র দশ বছর বয়সেই ইংরাজি ও ল্যাটিন  ভাষায় সুন্দর  কবিতা লিখতে পারতেন।

অরবিন্দের বয়স যখন সাত বছর তখন তিনি ও তাঁর ভাই ইংল্যান্ডে পড়তে যান। অরবিন্দ প্রথমে ম্যাঞ্চেস্টারের এক স্কুলে  ভর্তি হন। কেম্ব্রিজ বিশ্যবিদ্যালয় থেকে ট্রাইপেজ নিয়ে বি,এ পাশ করেন। মাত্র আঠারো বছর বয়সে তিনি ভারতীয় সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় অংশ নেন। সে সময়  বরোদার মহারাজা ছিলেন লন্ডনে। তিনি অরবিন্দকে তাঁর রাজ্যের শিক্ষা বিভাগে ভালো বেতনে কাজ করার জন্য আহ্বান  জানান। 

বরোদায় চলে আসেন অরবিন্দ।  এই সময় তিনি সংস্কৃত ও বাংলা ভাষা শিক্ষা শুরু করেন। লেখক দীনেন্দ্রকুমার রায়ের কাছে তিনি বাংলা ভাষা শেখেন।

বরোদায় জাতীয় শিক্ষা পরিষদে অধ্যাপকের চাকরি নেন। স্বাধীনতার বাণী ছড়িয়ে দেবার জন্য এই সময় তিনি বন্দেমাতরম নামে একটি ইংরাজি পত্রিকা বের করেন। ইংরেজ সরকার এ জন্য তাঁকে গ্রেপ্তার করে। এর সঙ্গে চলে আলিপুর  বোমা মামলা, কিন্তু দুই ক্ষেত্রেইও অরবিন্দ মুক্তি পান। এর কিছুদিন  পরে অরবিন্দ জানতে পারেন যে ইংরেজ সরকার তাঁকে বরাবরের জন্য বন্দী  রাখার ব্যবস্থা  করছে। তখন ১৯১০ সালে তিনি চন্দননগর পরে ফরাসী উপনিবেশ পন্ডিচেরিতে যান এবং নতুন  জীবন  শুরু করেন। তিনি যোগ সাধনার মাধ্যমে মুক্তির পথের নিশানা তুলে ধরেন।

ভারতের সাধনা ও রাজনীতিতে বিশ্বাসী  হয়ে অনেক বিদেশী  মহিলা ভারতে এসে মিলে গেছেন। ভগিনী নিবেদিতা,  মীরা রিচার্ড, অ্যানি  বেশান্ত, মাদার টেরেসা প্রভৃতি কয়েকজনের নাম উল্লেখ  করলেই একথার সত্যতা প্রমাণিত  হয়।

১৯১৪ সালে মীরা রিচার্ড নামে এক বিপ্লবী ফরাসী মহিলা অরবিন্দের  আশ্রমে আসেন এবং তাঁর কাছে দীক্ষা নেন। তখন মীরা রিচার্ডের নাম হয় শ্রীমা।

পন্ডিচেরিতে থাকাকালীন  তিনি যে সব অমূল্য গ্রন্থ রচনা করেন তাঁর মধ্যে The Mother, এবং The life Divine অন্যতম।

অহ্নিযুগের মহানায়ক শ্রী অরবিন্দ  ঘোষ পরবর্তী জীবনে আধ্যাত্মিক সাধনায় সিদ্ধি করে হয়ে ছিলেন ঋষি অরবিন্দ। ১৯৫০ সালের ৫ই ডিসেম্বর তিনি পরলোকগমন করেন।

No comments:

Post a Comment