30 April 2019

যেভাবে এলো শ্রমিকদের এই ঐতিহাসিক দিনটি।

দেশে বর্তমানে সপ্তদশ নির্বাচন পর্ব চলছে। ভোটের দিন রাজ্যগুলিতে ছুটি থাকছে। এর মধ্যে এসে গেল আর একটি ছুটির দিন। সেটা হল ১লা মে। ছুটি মানেই মজার দিন। কিন্তু এই দিনটির তাৎপর্য আমাদের ভুললে চলবে না।

এই দিনটি ঐতিহাসিক মে দিবস। শ্রমিকদের আত্মদানের দিবস। শ্রমিকরা তাদের ন্যায্য দাবিতে আন্দোলন গড়ে তোলে। দাবি ছিল দিনে ৮ ঘন্টা কাজ এবং  প্রাপ্য মজুরি। এই আন্দোলনের জন্য ১৮৬০ সালে শ্রমিকরা আমেরিকান ফেডারেশন অব লেবার নামে এক সংগঠন তৈরী করে। তাদের শ্লোগান ছিল সারা দিনে ৮ ঘন্টা কাজ, ৮ ঘন্টা বিশ্রাম, আর ৮ ঘন্টা শুধু নিজের জন্য।

এই আন্দোলনের জন্য তাদের প্রাণও দিতে হয়েছিল। ঘটনাটি ঘটেছিল ১৮৮৬ সালে। ১৮৮৪ সালে শ্রমিকদের দাবি ছিল ১লা মে, ১৮৮৬ সালের মধ্যে তাদের দাবি মেনে নিতে হবে। তাই ১লা মে যুক্তরাষ্ট্রের তিন লাখ শ্রমিক কাজ ছেড়ে রাস্তায় নেমে পড়লে আন্দোলন চরমে ওঠে। দুদিন পরে ৪ঠা মে, শ্রমিকরা সন্ধ্যের পর শিকাগোর হে-মার্কেট স্কয়ার নামে এক বাণিজ্যিক এলাকায় মিছিলের উদ্দেশ্যে জড়ো হন। পুলিশ এই শ্রমিকদের উপর অতর্কিতে হামলা শুরু করলে ১১ জন শ্রমিক শহীদ হন। তাছাড়া ছজন শ্রমিককে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে ১৮৮৭ সালের ১১ই নভেম্বর উন্মুক্ত স্থানে ফাঁসি দেওয়া হয়।

শেষ পর্যন্ত শ্রমিকদের ‘দৈনিক আট ঘণ্টা কাজ’-এর দাবী আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি পায়। ১৮৮৯ সালের ১৪ই জুলাই ফ্রান্সে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক শ্রমিক সম্মেলনে ১ মে শ্রমিক দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়। পরবর্তী বছর থেকে ১ মে বিশ্বব্যাপী পালন হয়ে আসছে ‘মে দিবস’ বা ‘আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস’।

আজকের দিনে শ্রমিকদের অবস্থানটা অনেকটা পাল্টে গেছে। এখন তাদের ৮ ঘন্টার বেশী কাজ করতে হয় এবং অনেক ক্ষেত্রে ন্যায্য মজুরিও জোটেনা। স্থায়ী শ্রমিকের বদলে অস্থায়ী শ্রমিকদের নিয়ে কাজ চলছে। সেখানে নেই কাজের কোন নিরাপত্তা। আজকের দিনে শ্রমিক আন্দোলনের রূপটাই বদলে গেছে।

প্রিয় পাঠক–পাঠিকা ভালো লাগলে লাইক, কমেন্ট ও শেয়ার করুন। যে কোনো বিষয়ে জানা- অজানা তথ্য আমাদের সাথে আপনিও শেয়ার করতে পারেন।১০০০ শব্দের মধ্যে গুছিয়ে লিখে ছবি সহ মেইল করুন  wonderlandcity.net@gmail.com ঠিকানায়। লেখা আপনার নামে প্রকাশ করা হবে।

No comments:

Post a Comment