20 March 2019

আজ ২০শে মার্চ খ্যাতনামা সাহিত্যিক, সাংবাদিক ও সম্পাদক বিবেকানন্দ মুখোপাধ্যায়ের ২৬তম প্রয়াণ দিবসে আমাদের শ্রদ্ধাঞ্জলি।

বিবেকানন্দ মুখোপাধ্যায় ৩রা জুলাই, ১৯০৪ সালে বাংলাদেশের ফরিদপুর জেলার মাদারীপুরে জন্মগ্রহন করেন। ১৯২৩ সালে ম্যাট্রিক পাশ করে স্কটিশচার্চ কলেজ ভর্তি হন কিন্তু অর্থিক অনটনে কলেজ ছাড়তে হয়।

১৯২৫ সালে আনন্দবাজার পত্রিকায় তার কর্মজীবন শুরু হয়। অর্থসঙ্কটে ভুগতে থাকা ঐতিহ্যবাহী যুগান্তর পত্রিকাকে পূনঃপ্রতিষ্ঠিত করেন বিবেকানন্দ মুখোপাধ্যায়। ১৯৩৭ সাল থেকে ১৯৬২ সাল পর্যন্ত তিনি দৈনিক যুগান্তর পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন। একইভাবে অর্থাভাবে ক্লিষ্ট বসুমতীর সম্পাদনার দায়িত্ব গ্রহণ করে পত্রিকাটিকে সচল করেন।

সাংবাদিকতা ছাড়া যুদ্ধ সংক্রান্ত লেখালিখিতে বিবেকানন্দ মুখোপাধ্যায় খ্যাতি লাভ করেন। "জাপানী যুদ্ধের ডায়েরী" এবং "রুশ জার্মান সংগ্রাম" বই দুটি  পাঠক মহলে খুব সমাদৃত হয়। এরপর তিনি "দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের ইতিহাস" গ্রন্থটি প্রকাশ করেন। বাংলা ভাষায় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের বিস্তৃত ইতিহাস এর আগে বা পরে বোধ হয় লেখা হয়নি। লেখক তাঁর সুদীর্ঘ অভিজ্ঞতা ও অনুসন্ধানে বিশ্বযুদ্ধে জড়িত চার্চিল, রুজভেল্ট, স্ট্যালিন, হিটলার ও অনান্য মহানায়কদের ব্যক্তিগত চারিত্রিক বৈশিষ্ঠও দক্ষতার সাথে বর্ণনা করেছেন। এই আসীম সাহসী সাংবাদিক ১৯৫০ সালে যুগান্তর পত্রিকায় পূর্ব পাকিস্তানে ইসলামিক মৌলবাদ দ্বারা অনুষ্ঠিত ভয়াবহতম হিন্দু গণহত্যার বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছিলেন। সে সময় যুগান্তর পত্রিকা প্রায় নিষিদ্ধ হতে চলেছিল এবং সাম্প্রদায়িক উস্কানি দেবার অভিযোগে বিবেকানন্দ মুখোপাধ্যায়ের গ্রেফতারি পরোয়ানা তৈরী হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু ঘটনাবলীর ভয়াবহতা স্বীকার করে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী রেডিওতে বক্তব্য রাখার পর গ্রেফতারি পরোয়ানা কার্যকরী হয়নি।

বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের সময় তাঁর নানা লেখা প্রকাশিত হয়। যেখানে তিনি বাংলাদেশকে ভারতের স্বীকৃতি ও সামরিক সাহায্য দেওয়ার গুরুত্ব তুলে ধরেছিলেন। যুগান্তরসহ বিভিন্ন কাগজে মুক্তিযুদ্ধের বিবরন লিখেছিলেন যা তখন বাংলাদেশের পক্ষে জনমত গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর বিবেকানন্দ মুখোপাধ্যায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আমন্ত্রণে বাংলাদেশে যান। তিনি ভারত-সোভিয়েত সুহৃদ সংঘের সভাপতি ছিলেন। বিশ্ব শান্তি সংসদের সাথে যুক্ত ছিলেন যুদ্ধবিরোধী সাংবাদিক বিবেকানন্দ মুখোপাধ্যায়। আণবিক পরীক্ষার বিরোধীতায় তিনি সম্পাদকীয় লেখেন তেজস্ক্রিয় পুঁইশাক। ১৯৯৩ সালের ২০শে মার্চ তিনি পরলোকগমণ করেন।

বিভিন্ন সময় নানা দেশ বিদেশের পুরষ্কার পান। ১৯৭০ সালে ভারত সরকার তাঁকে তৃতীয় সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মান পদ্মভূষনে সম্মানিত করেন।

প্রিয় পাঠক–পাঠিকা ভালো লাগলে লাইক, কমেন্ট ও শেয়ার করুন। যে কোনো বিষয়ে জানা- অজানা তথ্য আমাদের সাথে আপনিও শেয়ার করতে পারেন।১০০০ শব্দের মধ্যে গুছিয়ে লিখে ছবি সহ মেইল করুন  wonderlandcity.net@gmail.com ঠিকানায়। লেখা আপনার নামে প্রকাশ করা হবে।

No comments:

Post a Comment