16 February 2019

আজ ১৬ই ফেব্রুয়ারী, মেঘনাদ সাহার ৬৩ তম মৃত্যুবার্ষিকীতে আমাদের শ্রদ্ধাঞ্জলি।

ভারতীয় বিজ্ঞান জগতের অন্যতম স্মরণীয় নাম মেঘনাদ সাহা। যিনি এক দিকে যেমন ছিলেন  শিক্ষাবিদ ও বিজ্ঞানী তেমনি ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে ছিলেন। ভারতের বিজ্ঞান চর্চার সঙ্গে বিশ্বের পরিচয় ঘটিয়ে দেবার ব্যাপারে এবং ভারতের বিজ্ঞান গবেষণাকে বিশ্বমানে উন্নীত করার ব্যাপারে বিজ্ঞানী মেঘনাদ সাহার অবদান অনস্বীকার্য। গবেষণার স্বীকৃতি হিসেবে রয়েল সোসাইটির ফেলোশিপ পাবার পাশাপাশি তিনি চারবার নোবেল পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন পেয়েছিলেন। নিরলস চেষ্টা ও পরিশ্রমে গড়ে তুলেছেন ইন্সটিটিউট অব নিউক্লিয়ার ফিজিক্স।

ঢাকা জেলার তালেবাদ পরগনার অন্তর্গত সিওরাতলী গ্রামে ১৮৯৩ সালের ৬ অক্টোবর মেঘনাদ সাহা জন্মগ্রহণ করেন। ছোটবেলায় তিনি কঠোর দারিদ্রের মধ্য দিয়ে প্রতিপালিত হন। গ্রামের স্কুলে পড়াশোনা শেষে মেঘনাদ নিকটবর্তী শিমুলিয়ায় যান এবং সেখানে তিনি কাশিমপুর জমিদারের পারিবারিক চিকিৎসক অনন্ত কুমার দাসের আনুকূল্যে প্রতিপালিত হতে থাকেন। ১৯০৫ সালে তিনি ঢাকা কলেজিয়েট স্কুলে ভর্তি হন। এ সময় স্বদেশী আন্দোলনে জড়িত হওয়ার কারণে তাঁকে স্কুল ছাড়তে বাধ্য করা হয়। পরে মেঘনাদ সাহা কিশোরীলাল জুবিলী স্কুলে ভর্তি হন। ১৯১১ সালে ঢাকা কলেজ থেকে তিনি আই.এসসি পাস করেন এবং প্রেসিডেন্সি কলেজে ভর্তি হওয়ার জন্য কলকাতা যান। সেখানে তিনি স্যার  জগদীশচন্দ্র বসু, স্যার আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়, অধ্যাপক ডি.এন মলি­ক, অধ্যাপক সি.ই কুলিস প্রমুখ শিক্ষকের সান্নিধ্য লাভ করেন। যদিও মেঘনাদ সাহা গণিত শাস্ত্রের ছাত্র ছিলেন, তথাপি তিনি স্যার প্রফুল্ল চন্দ্রের দ্বারা প্রভাবিত হন। অল্পদিনেই মেঘনাদ সাহা তাঁর প্রিয় ছাত্রদের একজন ও ঘনিষ্ঠ সহযোগী হয়ে ওঠেন।

তাঁর রাজনৈতিক দায়বদ্ধতার অনুভূতি তাঁকে ১৯৫১ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে রাজনীতিতে প্রবেশ করতে উদ্বুদ্ধ করে। একজন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মেঘনাদ সাহা তাঁর নিকটতম কংগ্রেস প্রার্থীকে বিপুল ব্যবধানে পরাজিত করে ভারতের লোকসভার সদস্য নির্বাচিত হন। একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবে তিনি ১৯৪৭ সালের দেশ বিভাগের পর লক্ষ লক্ষ শরণার্থীর ত্রাণ ও পুনর্বাসন প্রক্রিয়ায় সংশি­ষ্ট ছিলেন। শরণার্থী পুনর্বাসন প্রক্রিয়াকে সুষ্ঠুভাবে সম্পাদন করার লক্ষ্যে ড. সাহা বেঙ্গল রিলিফ কমিটি গঠন করেছিলেন।

বিস্তৃত জ্ঞানের প্রতি আগ্রহ মেঘনাদ সাহাকে পঞ্জিকা সংস্কার প্রকল্পের সঙ্গে জড়িত করেছিল। জনগণ এবং শিক্ষার প্রতি সতত নিবেদিত প্রফেসর মেঘনাদ সাহা ছিলেন একজন অক্লান্ত কর্মী। ১৯৫৪-র পর থেকে পরিশ্রমী এই জ্ঞানকর্মীর স্বাস্থ্যের দ্রুত অবনতি ঘটতে শুরু করে এবং ১৯৫৬ সালের ১৬ই ফেব্রুয়ারি এক বৈঠকে যোগদানের উদ্দেশ্যে দিল্লির পরিকল্পনা কমিশন দপ্তরে যাওয়ার পথে মেঘনাদ সাহা হৃদরোগ আক্রান্তে মারা যান।


প্রিয় পাঠক–পাঠিকা ভালো লাগলে লাইক, কমেন্ট ও শেয়ার করুন। যে কোনো বিষয়ে জানা- অজানা তথ্য আমাদের সাথে আপনিও শেয়ার করতে পারেন।১০০০ শব্দের মধ্যে গুছিয়ে লিখে ছবি সহ মেল করুন  wonderlandcity.net@gmail.com  ঠিকানায়। লেখা আপনার নামে প্রকাশ করা হবে।

No comments:

Post a Comment