11 February 2019

কবি সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত প্রখ্যাত বাঙালি কবি ও ছড়াকার। কবিতার ভূবনে তিনি ছিলেন এক উজ্জ্বল নক্ষত্র।

আজ ১১ই ফেব্রুয়ারি বাংলা কবিতার ছন্দের জাদুকর কবি সত্যেন্দ্রনাথ দত্তের  ১৩৭তম জন্মবার্ষিকী।

সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত প্রখ্যাত বাঙালি কবি ও ছড়াকার। কবিতার ভূবনে তিনি ছিলেন এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। বাংলা সাহিত্যে কবিতায় ছন্দের কারুকাজ শব্দ ও ভাষা যথোপযুক্ত ব্যবহারের কৃতিত্বের জন্য তাঁকে 'ছন্দের যাদুকর' নামে আখ্যায়িত করা হয়।

ছোটবেলায় পড়া ছড়া-কবিতাগুলির মধ্যে সত্যেন্দ্রনাথ দত্তের ইলশে গুঁড়ি ইলশে গুঁড়ি, দূরের পাল্লার ছিপখান তিন-দাঁড় – তিনজন মাল্লা, পালকির গান পাল্কী চলে!পাল্কী চলে! ইত্যাদি আজ ও আমাদের স্মৃতি থেকে মুছে যাইনি। তাঁর কবিতার বিষয়বস্তু, ছন্দ, নির্মাণ কৌশল এবং শব্দ ও ভাষার কারুকার্যময়তায় উজ্জ্বল তাঁর প্রতিটি রচনা। নানা ধরণের ছন্দ উদ্ভাবনে তিনি ছিলেন অপ্রতিদ্বন্দ্বী। মেথরদের মতো অস্পৃশ্য ও অবহেলিত সাধারণ মানুষ নিয়েও তিনি কবিতা লিখেছেন। এই কবির কবিতা আজও পাঠকদের অনুরনিত করে। সবিতা, সন্ধিক্ষণ, বেনু ও বীনা, কুহু ও কেকা ইত্যাদি তাঁর বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থ।

কাব্যচর্চায় আত্মনিয়োগ করার আগে সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত পিতার ব্যবসায় যোগ দিয়েছিলেন। তিনি ছিলেন ভারতী পত্রিকাগোষ্ঠীর অন্যতম কবি। প্রথম জীবনে তিনি মাইকেল মধুসূদন দত্ত, অক্ষয় কুমার বড়াল প্রমুখের দ্বারা প্রভাবিত হন। বাংলা শব্দের সঙ্গে আরবি-ফার্সি শব্দের সমন্বিত ব্যবহার দ্বারা বাংলা কাব্যভাষার শক্তি বৃদ্ধির প্রাথমিক কৃতিত্ব তারই। অনুবাদের মাধ্যমে তিনি বিশ্বের কাব্যসাহিত্যের সঙ্গে বাংলার যোগাযোগ ঘটান। নবকুমার, কবিরত্ন, অশীতিপর শর্মা, ত্রিবিক্রম বর্মণ, কলমগীর প্রভৃতি ছদ্মনামে তিনি কবিতা লিখতেন। আরবি-ফারসি, চীনা, জাপানি, ইংরেজি এবং ফরাসি ভাষার বহু কবিতা অনুবাদ করে বাংলাসাহিত্যের বৈচিত্র্য ও সমৃদ্ধি সাধন করেন সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত। এই কবিতাগুলি রয়েছে তাঁর ‘তীর্থসলিল’, ‘তীর্থরেণু’ ও ‘মণিমঞ্জুষা’ নামক তিনটি অনূদিত কবিতার সংকলনে৷

সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত ১৮৮২ সালের ১১ই ফেব্রুয়ারি কলকাতার কাছে নিমতা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পিতামহ অক্ষয়কুমার দত্ত ছিলেন। তার পৈতৃক নিবাস বর্ধমানের চুপী গ্রামে। পিতা রজনীনাথ দত্ত ছিলেন কলকাতার বিশিষ্ট ব্যবসায়ী এবং পিতামহ অক্ষয় কুমার দত্ত ছিলেন তত্ত্ববোধিনী পত্রিকার সম্পাদক। সত্যেন্দ্রনাথ কলকাতার সেন্ট্রাল কলেজিয়েট স্কুল থেকে এন্ট্রান্স  এবং জেনারেল অ্যাসেমব্লিজ ইনস্টিটিউশন (বর্তমান স্কটিশ চার্চ কলেজ) থেকে এফএ।

বাংলা সাহিত্যের এই খ্যাতিমান কবি মাত্র ৪০ বছর বয়সে ১৯২২ সালের ২৫ জুন মৃত্যুবরণ করেন। আজ ১১ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ তাঁর ১৩৭তম জন্মবার্ষিকীতে জানাই আমাদের গভীর শ্রদ্ধা।

ভালো লাগলে লাইক, কমেন্ট ও শেয়ার করুন। জানা- অজানা তথ্য আমাদের সাথে আপনিও শেয়ার করতে পারেন।

No comments:

Post a Comment