06 February 2019

আজ ৬ই ফেব্রুয়ারী শহিদ বসন্ত কুমার বিশ্বাসের ১২৩তম জন্মবার্ষিকী। ওঁনার প্রতি রইল আমাদের শ্রদ্ধাঞ্জলি।

আজ ৬ই ফেব্রুয়ারী স্বাধীনতা সংগ্রামী এবং অগ্নিযুগের বীর বিপ্লবী বসন্ত কুমার বিশ্বাসের ১২৩তম জন্মবার্ষিকী। ওঁনার প্রতি রইল আমাদের শ্রদ্ধাঞ্জলি।

বসন্ত কুমার বিশ্বাস যুগান্তর দলের নেতা অমরেন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় ও  রাসবিহারী বসুর নিকট স্বাধীনতা সংগ্রামের সশস্ত্র বিপ্লবের দীক্ষা নেন। বড়লাট লর্ড হার্ডিঞ্জ ১৯১২ সালের ২৩ ডিসেম্বর তখনকার প্রভাবশালী ও বিত্তবান ব্যক্তিদের নিয়ে একটি শোভাযাত্রা বার করেন। শোভাযাত্রাটি দিল্লির কুইন্স গার্ডেন হয়ে চাঁদনীচক দিয়ে দেওয়ান-ই-আমের দিকে অগ্রসর হয়। বড়লাট লর্ড হার্ডিঞ্জ সস্ত্রীক হাতির পিঠে বসে এই শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ করেছিল। সেই সময় পূর্ব পরিকল্পনানুযায়ী বিপ্লবী রাসবিহারী বসুর নির্দেশে বালিকার ছদ্মবেশে বসন্ত কুমার বিশ্বাস মহিলাদের জন্য নির্দিষ্ট পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাংক ভবন থেকে বড়লাটকে লক্ষ্য করে বোমা নিক্ষেপ করে। ভাগ্যক্রমে বড়লাট বেঁচে গেলেন, মারা গেল তাঁর একজন চৌকিদার।  পুলিশ আততায়ীকে ধরার জন্য খোঁজ শুরু করে। রাসবিহারী বসু বসন্ত কুমার বিশ্বাসকে সঙ্গে নিয়ে দেরাদুনে চলে যান। ১৯১৪ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি তিনি যখন তাঁর পিতার শেষকৃত্য অনুষ্ঠান পালন করছিলেন, তখন তাঁকে নদীয়ার কৃষ্ণনগর থেকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাঁর বয়স ছিল মাত্র ১৯ বছর। ১৯১৪ সালের ২৩ মে দিল্লিতে দিল্লি-লাহোর ষড়যন্ত্র মামলার শুনানি শুরু হয় এবং ৫ অক্টোবর বসন্ত কুমারকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দেওয়া হয়। সরকার তাঁকে মৃত্যুদন্ড দিতেই বেশি আগ্রহী ছিল। তাই লাহোর হাইকোর্টে একটি আপীল দাখিল করা হয় এবং বিচারের নামে একটি প্রহসন অনুষ্ঠিত হয়। আম্বালা জেলে বসন্ত কুমার বিশ্বাসের ফাইলে কারচুপি করা হয়। ফাইলে তার বয়স দুবছর বাড়িয়ে প্রমাণ করার চেষ্টা করা হয় যে, তিনি তার কৃত অপরাধের তীব্রতা সম্পর্কে সম্পূর্ণ জ্ঞাত ছিলেন। এখন পর্যন্ত জেলের ফাইলে এ ভুলের সংশোধন করা হয়নি। বসন্ত কুমার বিশ্বাসকে ফাঁসি দ্বারা মৃত্যুদন্ডে দন্ডিত করা হয়। ১৯১৫ সালের ১১ মে বসন্ত কুমার বিশ্বাস অত্যন্ত শান্ত ও অবিচলিত মনে ফাঁসির মঞ্চে উঠেন। পাঞ্জাবের আম্বালা জেলে মাত্র ২০ বছর বয়সে মৃত্যুদন্ডে দন্ডিত হয়ে বসন্ত কুমার ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের আত্মত্যাগী হিসেবে ইতিহাসে স্থান করে নেন।

৬ই ফেব্রুয়ারী ১৮৯৫ সালে তাঁর জন্ম নদীয়া জেলার অন্তর্গত পোড়াগাছা গ্রামে। তাঁর পিতার নাম মতিলাল বিশ্বাস। নীল বিদ্রোহের নেতৃত্ব দানকারী প্রধান নেতা দিগম্বর বিশ্বাস তার পূর্বপুরুষ। গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পাঠ শেষ করে বসন্তকুমার বিশ্বাস  মুড়াগাছা সর্বার্থ সাধক বিদ্যালয়ে (মুড়াগাছা উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় ) স্বর্গীয় শ্রী রূপলাল খাঁ -এর তত্ত্বাবধানে ভর্তি হয়েছিলেন। তিনি বিদ্যালয়ের ছাত্রাবাসে থাকতেন। প্রধানশিক্ষক মহাশয় শ্রী ক্ষীরোদ গঙ্গোপাধ্যায় বসন্তকে খুবই স্নেহ করতেন। ছোট থেকেই বসন্ত ছিলেন বিপ্লবী মনোভাবাপন্ন।





1 comment:

  1. শহীদ বসন্ত কুমার বিশ্বাসকে সর্বসমক্ষে তুলে ধরার জন্য ধন্যবাদ জানাই। তরুণ বিশ্বাস, সহ-সম্পাদক শহীদ বসন্ত বিশ্বাস স্মারক সমিতি, কলকাতা।

    ReplyDelete